বিচার চেয়ে কী হবে—বললেন নাহিদের মা

ছোট ছেলেকে কোলে নিয়ে অঝোরে কাঁদছেন নাহিদের মা
ছোট ছেলেকে কোলে নিয়ে অঝোরে কাঁদছেন নাহিদের মা  © সংগৃহীত

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় মারা গেছেন নাহিদ। তিনি একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ‘ডেলিভারিম্যান’ ছিলেন। তার বাড়ি কামরাঙ্গীরচরের রনি মার্কেটের মেম্বার গলিতে। ঘটনার দিন সকাল ১০টায় কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। দুপুরে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় মাথায় আঘাত পান নাহিদ। পরে রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

কামরাঙ্গীরচরের রনি মার্কেটের মেম্বার গলির ভেতরে একটু এগোতেই আধা কাঠা জমির ওপর নাহিদদের বাড়ি। দেড় হাত প্রশস্ত সিঁড়ি বেয়ে দোতলার ঘর। এ ঘরে থাকেন তার বাবা নাদিম হোসেন, মা নার্গিস এবং ছোট দুই ভাই। তৃতীয় তলায় টিনশেডের ঘরে থাকতেন নাহিদ ও তাঁর স্ত্রী ডালিয়া। ধীরে ধীরে বাড়ি-সংসার সাজানোর কথা ছিল তাদের।

নাহিদকে হারিয়ে বাড়িতে চলছে আহাজারি। আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা জানাচ্ছেন। ছেলে এভাবে হারিয়ে শোকে কাতর মা নার্গিস বলেন, ‘আমরা বিচার চাই না। নাহিদকে তো আর ফেরত পাব না, বিচার চেয়ে কী হবে। বিচার চাইলেই তো বিচার পাব না। ঘর-সংসার কীভাবে চলব।’

গত মঙ্গলবার দিনের বেলায়ও ছয়জনের পরিবার ছিল নার্গিস বেগমের। বুধবার সেই পরিবার হয়ে যায় পাঁচজনের। সংসার থেকে নাই হয়ে গেছেন নাহিদ। তার রোজগার দিয়েই চলত সংসারটি। তাদের এখন বড় প্রশ্ন, কীভাবে চলবে সংসার?

বেতনের পুরো টাকাই সংসারে দিতেন নাহিদ। নাহিদের মা বলেন, ‘একটি কোম্পানিতে কাজ করে নাহিদের বাবা অল্প কিছু টাকা পায়। এটা দিয়ে শোধ করতে হয় ঋণ। আর সংসার চালাত নাহিদ।’

আরো পড়ুন: নিউমার্কেটে সংঘর্ঘের ঘটনায় নাহিদের পর চলে গেলেন মোরসালিনও

পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নাহিদ ও ডালিয়ার বিয়ে হয়। ডালিয়াদের বাসা লালবাগে। ডালিয়া বলেন, ‘বিয়ের দিন ছিল মঙ্গলবার, আর সে (নাহিদ) মারাও গেলেন মঙ্গলবার। সাহ্‌রিতে মাংস রান্না হয়েছিল। মাংস দিয়ে ভাত খেয়েছিল নাহিদ। রোজামুখেই সে মারা গেল।’

ডালিয়া আরও বলেন, ‘নিজের জন্য কিছু কিনতে চাইত না নাহিদ। খালি আমার লাইগা কেনাকাটা করত। কোনটা লাগবে, কোনটা প্রয়োজন। এখন কে দেখবে আমাকে, কে ভরসা দেবে?’ ডালিয়ার দুই হাতভরা ছিল রাঙা মেহেদির নকশা। হাতের তালুতে মেহেদি রঙে লেখা, ‘আই লাভ ইউ নাহিদ।’ ডালিয়া বললেন, ‘নাহিদ চলে গেল, রেখে গেল ভালোবাসা।’

গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে নাহিদের মরদেহ কামরাঙ্গীরচরে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence