রেলের ই-টিকেটিংয়ে সাইবার হামলা, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন ই-টিকেটিং ব্যবস্থায় সমাস্যা
বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন ই-টিকেটিং ব্যবস্থায় সমাস্যা  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু হতে না হতেই চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। শনিবার (২৬ মার্চ) বাংলাদেশ রেলওয়ে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ‘সহজ’ এর মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু করে।

যাত্রী সাধারণের অভিযোগ, টিকেট তো দূরের কথা নতুন ওয়েবসাইটে ঢুকতেই পারেননি। তারা বলছেন সকাল থেকে ট্রেনের টিকিট কাটার ওয়েবসাইটটি আর কাজ করছে না।

এতে চরম বিরক্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। তবে, ই-টিকেটিংয়ের সার্ভিস প্রোভাইডার সহজ লিমিটেড জানিয়েছে, প্রথম দিনই তারা ‘সাইবার আক্রমণের’ শিকার হয়েছেন। 

আরও পড়ুন: কাউন্টার থেকে কাটতে হবে আন্তনগর ট্রেনের টিকেট

যদিও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, মহান স্বাধীনতা দিবসের ছুটি উপলক্ষে প্রথম দিনেই টিকেট কাটার চাপ বেশি ছিল। তাই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে যারা সাইটে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন তাদের অনেকে আবার পেমেন্ট জটিলতায় পড়েছেন।

এর আগে শনিবার সকাল ৮টা থেকে ই-টিকেট বিক্রি শুরু হয়। শুরুতেই ওটিপি, ওয়েবসাইট লোডিং ও সার্ভারে সমস্যাসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়। এরপরই এ নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।  একজন লিখেছেন, শত চেষ্টা করেও ওটিপি পাচ্ছি না।  কেউ লিখেছেন, এখন সকাল ৮টা বেজে ১৯ মিনিট। ওটিপির বক্সই আসছে না স্ক্রিনে।

কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছে, সার্ভার কি ক্রাশ করেছে? আবার আরেকজন পোস্টে ক্ষোভ ঢেলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে ডিজিটাল বাংলাদেশেও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ট্রেনের টিকিট বিক্রি করতে পারেনা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এখনও ভাড়া করা কোম্পানি দিয়েই বিক্রি হচ্ছে টিকিট, এর চেয়ে বড় লজ্জা আর কী হতে পারে?

আরও পড়ুন: শিক্ষাঙ্গনে নেতার নামে স্লোগান অশোভনীয়: চবিতে শিক্ষা উপমন্ত্রী

দিনভর এসব অভিযোগের মধ্যেই সহজ’র জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করছেন। দ্রুত ই-টিকেটিং সিস্টেমটা সচল করতে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে। শুধু অনলাইনে এই অচলাবস্থাটা তৈরি হয়েছে। ‘সাইবার হামলার’ কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্টেশনে কম্পিউটারাইজ প্রোগ্রামে কোনো সমস্যা হয়নি।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আমরা দেশের ৭৭টা স্টেশনে কম্পিউটারাইজ পদ্ধতিতে প্রায় ৪১ হাজার টিকিট বিক্রি করেছি। তিনি দাবি করেছেন, ‘সাইবার হামলার’ কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সাইবার হামলার বিষয়ে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, এই কথাটা প্রথম শুনলাম, সাইবার হামলার কথা শুনিনি। শুনেছি সকালে কিছু সমস্যা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ রেলওয়েতে কম্পিউটারভিত্তিক টিকেটিং সিস্টেম ১৯৯৪ সালে চালু করা হয়। প্রথম পর্যায়ে ২৭টি স্টেশনে কম্পিউটারাইজড টিকেট বিক্রি শুরু হয়। বর্তমানে ১শ ৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট ৭৭টি স্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হচ্ছে। দৈনিক প্রায় ৯০ হাজার ও মাসিক প্রায় ২৭ লাখ যাত্রীর টিকিট কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়। এ সব টিকিটের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১৩ লাখ টিকিট অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়া হয়। ট্রেনের টিকিট কাটার ই-সিস্টেম সেবাটি দিচ্ছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সহজ লিমিটেড। এই সেবা আজই চালু হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ