আওয়ামী লীগ নেতার মামলায় মাদ্রাসা শিক্ষকসহ ৪ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:২৪ PM , আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:২৪ PM
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতার দায়ের করা সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষক সহ ৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব । রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।
আটক শিক্ষকের নাম মাওলানা মুফতি কাওসার হাসান (৪২)। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জামিয়া গাফুরিয়া দারুসসুন্নাহ ইসলামপুর মাদ্রাসার শিক্ষক। একই সাথে তিনি ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার চালমোহাল জামে মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন
জানা যায়, গত ৫ মার্চ ওই মসজিদে জুম্মার নামাজের খুতবার পূর্বে বয়ানে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সেনাপ্রধানের ভাইয়ের মৃত্যুদন্ড মওকুফ করে দিয়েছেন অথচ অভিজিৎ হত্যার আসামিদের ফাঁসি দেয়ার চেষ্টা করছে। তাই আমরা সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করব আপনারা এতে রাজি আছেন তো?’
আরও পড়ুন: ঢাবিতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার দাবিতে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ বৃহস্পতিবার
তার এমন বক্তব্যের বিষয়ে ওই মাদ্রাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল ওই শিক্ষক কাওসার হাসানের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যা বলেছি ঠিক বলেছি। এবিষয়ে আমাকে জ্ঞান দিবেন না।”
পরে ওই শিক্ষক বিষয়টি মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্র শিক্ষকদের কাছে জানান এবং মাদ্রাসায় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির মোবাইল ফোনে ধারণ করা কথোপকথন রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দেন, এনিয়ে ছাত্র ও শিক্ষক মিলে মাদরাসায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় মাদরাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুলের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চোরাগলির পথ খুঁজছে: তথ্যমন্ত্রী
এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন সমঝোতার চেষ্টা করে কমিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে দেন। পরে বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর মাদরাসাটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি মাদরাসার কার্যকরি পরিষদের মিটিংয়ে এমন ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও ছাত্রদের বহিষ্কার ও আইনি ব্যবস্থা নিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষক ও ছাত্রদের বহিষ্কার করা হয়।
পরে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল মতিন। তখন থেকেই ওই ছাত্র ও শিক্ষকরা পলাতক হয়ে যান। এরই মাঝে রোববার রাতে উপজেলার জামিয়া দ্বীনিয়া দারুল উলুম মার্কাজ মাদরাসা থেকে ওই শিক্ষককে আটক করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেন। পরে পুলিশ সোমবার বিকেলে তাদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে কোর্টে প্রেরণ করা করে।
আরও পড়ুন: কুয়েট অধ্যাপকের মৃত্যু, ভিসি কার্যালয়ে ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কাদের মিয়া বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। তারপর থেকেই তারা পলাতক ছিলো। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।