জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বিয়ের খবর সঠিক নয়: পাখি

নাজমুল আকন ও ইশরাত জাহান পাখি
নাজমুল আকন ও ইশরাত জাহান পাখি  © টিডিসি ফটো

পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্র নাজমুল আকনকে (২৩) অপহরণ করে জোরপূর্বক বিয়ে করার যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত তরুণী ইশরাত জাহান পাখি। নাজমুল তার সাবেক প্রেমিকার প্ররোচনায় তাকে এখন হয়রানি করেছেন বলেও তিনি জানান।

আজ মঙ্গলাবর (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সব ঝামেলা সমাধান করে পাখি বাকি জীবন নাজমুলের সঙ্গে থাকতে চান।

অভিযুক্ত তরুণী ইশরাত জাহান পাখি জানান, নাজমুলের সাথে আমার দুই বছরের সম্পর্ক ছিলো। ২০২০ সালের লকডাউনের শুরুতে আমি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যাই। আমি রাজধানীর মিরপুর বাঙলা কলেজে পড়ালেখা করি। পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। করোনার শুরুতে মার্চ-এপ্রিলে লকডাউন শুরু হলে আমি গ্রামের বাড়ি চলে আসি। এখানেই তার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়। পরে আমরা দুজনে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেই।

তিনি বলেন, নাজমুলকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করার যে বিষয়টি প্রচার হচ্ছে, বিষয়টি আসলে মোটেও সেরকম কিছু নয়। সে স্বেচ্ছায় বিয়ে স্বাক্ষর করেছে। আর ভিডিওতে ঘাড় ধরার যে বিষয়টি দেখা যাচ্ছে, সেটি হলো কাবিন কম দেওয়ার কথা বলায় হয়েছে। তাকে মিষ্টি খাওয়াতে গেলে সে ভিডিও করতেছে দেখে না খেয়ে সেটি ফেলে দেয়।

‘‘মূলত সমস্যা হলো, তার সাথে আরও এক মেয়ের ৪ বছরের সম্পর্ক রয়েছে। আমার সাথে সম্পর্ক চলাকালে সে ওই মেয়েটার সাথেও কথা বলতো। তারপর আমি কোনভাবে ওই মেয়েকে খুঁজে বের করে তার সাথে কথা বলি। মেয়েটি আমাকে জানিয়েছে, তাদের ৪ বছরের সম্পর্ক চলছে।

বিয়ের অনুষ্ঠানে নাজমুল-পাখি

তারপর এটা নিয়ে আমার সাথে নাজমুলের অনেক ঝামেলা হয়। আমি নিজে তাকে ঢাকা নিয়ে এসেছি। পরে তাকে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একসঙ্গে থাকতাম। কিন্তু সে আমাকে বিয়ে করতে চায় না। আমি বিয়ের জন্য বললে সে কালক্ষেপন করতে থাকে।’’

ভুক্তভোগী কলেজছাত্র নাজমুল জেলার মির্জাপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের জালাল আকনের ছেলে। আর অভিযুক্ত তরুণী ইশরাত জাহান পাখি একই উপজেলার গাজিপুর গ্রামের মো. আউয়াল মিয়ার মেয়ে।

এদিকে, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাজমুল আকন বাদী হয়ে গত ৩ অক্টোবর পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এক নারীসহ অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পড়ুন: কলেজছাত্রকে অপহরণ করে বিয়ে করলেন তরুণী

গণমাধ্যমে প্রচারিত ‘জোরপূর্বক তুলে নিয়ে’ বিয়ের কথা জানিয়ে ইশরাত জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে আমাদের বিয়ে হয়। সে এ বিয়ে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। মামলায় সে ২৭ তারিখে পটুয়াখালি লঞ্চঘাট থেকে তাকে তুলে নেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু আমাদের বিয়ে হয় রাজধানীর রায়ের বাজারে। তাহলে সেদিন আমি পটুয়াখালি যাবো কিভাবে?

তিনি আরও জানান, ‘‘কোন জোরপূর্বক বিয়ে হয়নি। দুজনের ইচ্ছার ভিত্তিতেই এ বিয়ে হয়েছে। ঝামেলা যেটা হয়েছে, সেটা হলো কাবিনের টাকা নিয়ে। তাকে বলেছিলাম ৫ লাখ টাকা কাবিন দিতে। কিন্তু সে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।’’

নাজমুল তার সাবেক প্রেমিকার প্ররোচনায় তাকে এখন হয়রানি করেছেন বলে দাবি ইশরাতের। তিনি বলেন, যে মেয়ের সাথে নামজুলের ৪ বছরের সম্পর্ক সে মেয়ে এখন এসব করতে উদ্বুদ্ধ করছে। আর মামলা নিয়ে কাজ করতেছে আমার শশুর।

ইশরাত বলেন, ‘‘নাজমুল আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে। আমার জীবনে আর কোনকিছু বাকি নেই। নাজমুল আমাকে না নিলে আমি আত্মহত্যা করবো। আমি ছাড়াও নাজমুল আরও অনেক মেয়ের সাথে এরকম করেছে। বিয়ের পর তা জানতে পেরেছি। আমি চাই না নাজমুল আর কোন মেয়ের জীবন নষ্ট করুক।’’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence