ছাত্রজীবনে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ছাত্রজীবনে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। ইসলাম কখনো জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। এর জন্য ছাত্রজীবন থেকেই সচেতন হওয়া জরুরি। এ সময় বাবা-মার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে সন্তানদের।

সোমবার (১৫ মার্চ) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আইজিপি।

তিনি আরো বলেন, জঙ্গিদের হাতেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানরা নিগৃহীত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মুসলমানদের রক্ত ঝড়েছে, সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে। একইসঙ্গে ছাত্রজীবন থেকেই সচেতনভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধের চর্চা করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বেনজীর আহমেদ বলেন, মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। অংকুরেই শেষ করে দেয় মাদক। আমাদের ভেতরে আত্মমর্যাদা থাকতে হবে। দেশের প্রতি সম্মান থাকতে হবে। বাংলাদেশের জাতি হিসেবে অহংকার করার মতো অনেক কিছু আছে। দেশের অতীত-ইতিহাসকে জানতে হবে।  

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে তোমাদের ইসলামকে জানতে হবে। অনেক বই রয়েছে সেগুলো পড়তে হবে। তবে ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দুই লাইন নিয়ে নয়। ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় ধর্মীয় গ্রন্থ পাওয়া যায় সেগুলো পড়ে হবে।

আইজিপি বলেন, আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ তোমরাই। তোমরা ভাগ্যবান স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছো। এখন আমাদের শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়তে গেলে পড়া শেষ করে দেশে চলে আসে। কারণ বাংলাদেশ এখন অমিত সম্ভাবনার দেশ। কিছু কুলাঙ্গার দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলে। একজন সভ্য, ভালো মানুষ কখনো অশ্লীল কথা বলতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে তাদের কোনো ইজ্জত নেই। তারা পরগাছা, ওইসব পরগাছা আমাদের দরকার নেই।

আইজিপি বলেন, ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। ১৭-২৬ মার্চ পর্যন্ত খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বের না হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। পাঁচ দেশের রাষ্ট্রীয় প্রধানরা আসবেন তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে ডিএমপি। এ কয়টাদিন রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে দারিদ্রতা বিদায় নেবে। দারিদ্র যে কত ভয়ানক তা যারা না দেখছে তারা বিশ্বাস করবে না। অর্ধাহারে, অনাহারের কী জীবন তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। এক সময় এ বস্তিবাসী ডাস্টবিন থেকে খাবার টোকাইয়ে খেতো। এগুলো এখন নেই।

বেনজীর আহমেদ বলেন, গত ১২ বছরে বাংলাদেশে যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষায় বেশি বরাদ্দ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ানো হচ্ছে। বই বিনামূল্যে পাচ্ছে। আমরা বই পেতাম তিন চার মাস পর। এখন এ পরিস্থিতি নেই।

তিনি বলেন, আমাদের যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে আমাদের অর্থনৈতিক কারণে। যৌথ পরিবারের একটা সুবিধা ছিল এখানে মুরব্বিদের কাছ থেকে অনেক কাউন্সিলিং পেতে শিশুরা। এটা এখন হয় না।

আইজিপি বলেন, আমি আমার সন্তানদের দিয়ে বুঝি সে কত একাকীত্ব বোধ করে। কিন্তু যদি যৌথ পরিবার থাকতো তাহলে তার দাদা-দাদি, নানা-নানি, কাজিন, চাচা-চাচি থাকতো। তাহলে তাদের সঙ্গ পেত সে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান।

The Daily Campus এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন