তিতাসের মৃত্যুতে সেই যুগ্ম সচিবের দায় নেই!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:১১ PM , আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:১৮ PM
ভিআইপি সুবিধা দিয়ে দেরিতে ফেরি ছাড়ার কারণে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় সেই যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলের কোনো দায় খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। সেই সাথে এ ঘটনায় মাদারীপুর জেলার ডিসিরও কোনো দায় পায়নি তারা। তবে ফেরিঘাটের তিন কর্মচারীকে উক্ত ঘটনায় দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে এ-সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই প্রতিবেদনটি দাখিল করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনে ফেরিঘাটের তিন কর্মচারীকে দায়ী করা হয়েছে। দায়ী ব্যক্তিবর্গ হলেন- কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন, ঘাটের প্রান্তিক সহকারী খোকন মিয়া এবং উচ্চমান সহকারী ও গ্রুপ প্রধান ফিরোজ আলম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ায় তিতাসের মৃত্যু হওয়ার কারণে তিনজন দায় এড়াতে পারেন না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডল জানতেন না যে, ফেরিঘাটে মুমূর্ষু রোগী আছে। কোনো ব্যক্তিবিশেষের জন্য কোনোভাবেই ফেরি দেরি করে ছাড়া যাবে না বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি এ প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্ত দলের অপর দুই সদস্য হলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ. সাত্তার শেখ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব তোফায়েল ইসলাম।
গত ৩১ জুলাই মাদারীপুর কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন- এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে রুলে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন।
নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভাড়া করা একটি আইসিইউ সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশে রওনা দেন পরিবারের লোকজন।
রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটের মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন ‘কুমিল্লা’ নামে ফেরিটি ঘাটে যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। এ সময় সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা আসবেন বলে ওই ফেরিকে অপেক্ষা করতে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।
তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় তিতাস। বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।