আখতার-নাহিদদের এপিসিতে ওঠানোর কারণ জানালেন এনসিপি নেতা তুহিন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫১ PM , আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:১৯ PM
গোপালগঞ্জে হামলার মুখে পড়ে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর নিরাপত্তা প্রহরায় এলাকা ত্যাগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে এসপি অফিস থেকে সেনাবাহিনীর এপিসিতে (আর্মর্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) করে তাদের বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। এ সময় গাড়িবহরের সামনে-পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক যান ছিল।
এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা জন্ম নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য-সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে এই পোস্ট দেন তিনি।
পোস্টে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ থেকে এপিসিতে ওঠানোর দায় আমিসহ কয়েকজনের। আর্মি যখন আমাদের রেস্কিউ করতে আসে তখন বাহিরে চলছে গুলি ও ককটেল হামলা। আর্মির সাফ কথা, তারা ফেস বাই ফেস সবাইকে এপিসিতে করে নিবে। তাদের অর্ডার। অন্যদিকে নাহিদ ও হাসনাত জানিয়ে দেয়, সবাই একত্রে যাবো এবং গাড়িতে। এগুলো নিয়ে প্রায় আধাঘণ্টা দেনদরবার চলে। এরপর সবাই নিচে নামি। তখন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও সামরিক কর্মকর্তা আমাকে জানান [যেহেতু আমিসহ কয়েকজন ওনাদের সঙ্গে কমিউনিকেশন রাখছিলাম] শীর্ষ নেতারা জাতীয় সম্পদ, সেহেতু অন্তত ওনাদের এপিসিতে দেন।
এ নেতা লেখেন, এই নিয়ে নিচেও অনেকক্ষণ ঝামেলা হয় এবং আমি ও ওয়াহিদ এক প্রকার জোর করে ওনাদের এপিসিতে তুলে দেই। সেখান থেকে আবারও নাহিদ ও হাসনাত নেমে যায়। সুঠাম দেহের হাসনাতকে ও নাহিদকে দ্বিতীয়বার ধস্তাধস্তি করেই এপিসিতে উঠাই। বহর বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নাহিদ যে গাড়িটায় করে আসছিল ওইটাকে লক্ষ্য করে ককটেল, গুলি ও ইট-পাটকেল মারে। এতে অনেকগুলো গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং অনেকে আহত হয়। অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আহত হন। গোপালগঞ্জ শহর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওনারা নেমে আবার যার যার গাড়িতে উঠেন। ততক্ষণে গুলি করা কমেছে। তবে ইটপাটকেল অব্যাহত ছিল। আমাদের বহরের একটা গালিতে গুলি লাগে এবং চাক্কা পাঞ্চার হয়ে যায়। দুইটা ঘাড়ি ঝাঁজরা হয়ে যায়। প্রশাসনের ব্যাকাপ নিয়ে আর কিছু বললাম না। তারা মনে হয় শুরুতে চাইছিল হাসনাতরা মরে যাক।
আরিফুর রহমান তুহিন লেখেন, অনেকেই দেখছি হাসিনার হামলাকে ছাপিয়ে এই এপিসিতে ওঠাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। কয়েক হাজার অস্ত্রধারীর সঙ্গে আমরা ৪টা ঘণ্টা টিকে ছিলাম সেটা আপনাদের চোখে পরলো না। এটা সত্যিই দুঃখজনক। আমার নেতাদের কাছে যেমন আমাদের জীবন গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের কাছেও তাদের জীবন আমাদের জীবনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আপনাদের নেতাদের মতো উন্নতমানের গাড়ি ও দুই ডজন সিকিউরিটি ফোর্স নিয়ে ঘুরি না। আমাদের নেতারা বহরে হাইস, নোয়াহ গাড়িতে আমাদের সঙ্গে চড়েন। যেগুলোতে সামান্য ইট পরলেও কাচ ভেঙে যায়।
তিনি আরো বলেন, আর সন্ত্রাসীদের মূল লক্ষ্য ছিল নাহিদ-আখতার-হাসনাতরা এটা তো সহজেই অনুমেয়। সুতরাং আমরা আমাদের নেতাদের জীবন বাঁচাতে যা দরকার সেটা করেছি। আপনারা একটা সন্ত্রাসী বাহিনীকে ছাপিয়ে এপিসি নিয়ে পরে থাকবেন জানলে সবাই ওইখানেই মরে যেতাম। ভালো থাকবেন আমাদের ওইসব বন্ধুরা।