সাতক্ষীরা শহরে মশার উপদ্রবে জনজীবন অতিষ্ঠ
- সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৭ PM , আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫২ PM
সাতক্ষীরা শহরে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শীতের বিদায়ের পর থেকেই মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ পৌরবাসী। দিন তো বটেই, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই মশার কামড়ে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন শহরের মানুষ। ইফতার, সাহরি কিংবা তারাবির নামাজেও স্বস্তি মিলছে না।
সাতক্ষীরা পৌরবাসী অবিলম্বে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফগার মেশিন চালু করার পাশাপাশি নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার ও মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাতক্ষীরা শহরের সবচেয়ে বড় বিনোদন কেন্দ্র শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে প্রতিদিন হাজারো মানুষ অবসর কাটাতে আসেন। তবে মশার উপদ্রবে এখন সেখানে বসে থাকাই দায় হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে নামাজের সময় মসজিদেও মশার উৎপাত ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
শহরের বাসিন্দা আব্দুল আলীম বলেন, রাতে ঘুমানো, দিনে কাজ করা এমনকি ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা সব কিছুই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও মশার কামড় থেকে মুক্তি মিলছে না।
আরও পড়ুন: ওরশ করার সিদ্ধান্ত, মাজারের গেট গুঁড়িয়ে দিল তৌহিদি জনতা
সাবিনা খাতুন বলেন, ‘মশার কামড়ে সাহরি ও ইফতার করাই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের ৩১ দশকি ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০০ কিলোমিটার ড্রেন, দেড় শতাধিক ডাস্টবিন, কসাইখানা ও গণশৌচাগার রয়েছে। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে এগুলো এখন মশার নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। শহরের বুক চিরে প্রবাহিত প্রাণসায়র খালও মশার বংশবিস্তারের অন্যতম স্থান।
মানবাধিকারকর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, শহরের জলাবদ্ধ এলাকা ও অপরিচ্ছন্ন ড্রেনগুলোই মশার বংশবিস্তারের প্রধান কারণ। নিয়মিত পরিষ্কার না করার ফলে মশার উৎপাত বেড়েই চলছে।
নাগরিকদের অভিযোগ, আগে পৌরসভা মাঝেমধ্যে ফগার মেশিন ব্যবহার করলেও এখন তা একেবারেই বন্ধ। ছিটানো হচ্ছে নিম্নমানের ওষুধ, যা কোনো কাজেই আসছে না।
আরও পড়ুন: গণপিটুনিতে ২ জন নিহত, গুলিবিদ্ধ ৫
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন বলেন, শুধু স্প্রে নয়, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের ব্যবস্থা করতে হবে। আধুনিক পদ্ধতিতে মশকনিধনের উদ্যোগ নিতে হবে পৌরসভাকে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমরা নিয়মিত মশকনিধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে বাসিন্দাদেরও সচেতন হতে হবে এবং বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।’