আবরার হত্যার আসামিদের ‌‌‘আইনজীবী’ শিশির মনির, যা বললেন মির্জা গালিব

আবরার ফাহাদ, শিশির মনির ও মির্জা গালিব
আবরার ফাহাদ, শিশির মনির ও মির্জা গালিব  © টিডিসি সম্পাদিত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স এবং এ মামলায় দণ্ডিত আসামিদের দায়ের করা আপিল শুনানি শেষে এটি কিউরিয়া অ্যাডভাইজারি ভল্ট (অর্থাৎ যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে) হিসেবে রেখে দেন।

আবরার হত্যার আসামিদের ‌‌‘আইনজীবী’ শিশির মনির-এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনা ঝড় উঠেছে। এ বিষয়ে এবার মুখ খুললেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নিজ ভেরিফায়েড আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।

আরো পড়ুন: ভাড়া ভবনে ভিসির কক্ষ সাজাতে ব্যয় ২০ লাখ টাকা

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আবরার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জন আসামি শিশির ভাইয়ের চেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেছিল। পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট আর পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য-প্রমাণ ( circumstantial evidence ) দেখে উনার চেম্বার ১২ জনের মধ্যে ৫ জনের মামলা গ্রহণ করে নাই। এই পাঁচ জনকে নিরপরাধ বলে মনে হয় নাই উনাদের কাছে। বাকী সাত জনের মধ্যে দুইজনের ক্ষেত্রে আইনজীবী হিসেবে উনার সাবমিশান ছিল মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আদালত যেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।’

তিনি আরও লেখেন, ‘অর্থাৎ এই দুইজনকে উনি নির্দোষ বলে মনেও করেন নাই, আদালতে আইনজীবী হিসেবে তাদেরকে নির্দোষ বলে দাবিও করেন নাই। বরং উনি শুধু মনে করেছেন যে, অপরাধের সাথে এই দুইজনের সংশ্লিষ্টতা মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার লেভেলের না। আরেকটু ছোট শাস্তি হওয়া উচিত। বাকী পাঁচ জনের ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক স্বাক্ষ্যপ্রমান (circumstantial evidence ) এর ভিত্তিতে তার মনে হয়েছে তারা ফৌজদারি অপরাধ করেন নাই।’ 

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি যেহেতু স্বাক্ষ্যপ্রমান এর ডিটেইলস ব্যক্তিগতভাবে পর্যালোচনা করি নাই, শিশির ভাইয়ের জুডিশিয়াল মাইন্ডের জাজমেন্ট ঠিক আছে কিনা, আমি তা বলতে পারব না।  কিন্তু এইটুকু আমি দেখতে পাইতেছি যে, উনি যাদেরকে অপরাধী মনে করেছেন তাদের মামলা নেন নাই। দুইজনের ক্ষেত্রে তাদেরকে নিরপরাধ হিসেবে আর্গুমেন্টও করেন নাই। বরং তাদের সেন্টেন্সিং (শাস্তির মাত্রা নির্ধারণ) এর ক্ষেত্রে আর্গুমেন্ট করেছেন। এইটাকে জুডিশিয়াল নৈতিকতার বাইরে বলে মনে হচ্ছে না আমার কাছে।’

আরো পড়ুন: লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ ও অধিকার রক্ষায় ছাত্র সংসদ চান শিক্ষার্থীরা

তিনি আরও লেখেন, ‘আবরার আমাদের সময়ের হিরো। যারা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তারা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী। এই সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমাদের সবার কাম্য। একজন আইনজীবী কাউকে অপরাধী হিসেবে বিশ্বাস করলে কোর্টে গিয়ে তাকে নিরপরাধ হিসেবে আর্গুমেন্ট করতে পারেন না। করলে সেইটা অনৈতিক হয়।কিন্তু একজন আইনজীবী যদি  মনে করেন,  অভিযুক্ত কেউ অপরাধের তুলনায় বেশী শাস্তি পেয়েছেন অথবা ভুলক্রমে অপরাধ না করে শাস্তি পেয়েছেন, তাহলে তার পক্ষে দাঁড়ানোর নৈতিক অধিকার রাখেন।

মির্জা গালিব লেখেন, ‘এই জায়গা থেকে আমি শিশির ভাইয়ের পজিশানকে সমালোচনা করব না। এই মামলা হয়তো উনি না নিলেই ভাল করতেন।  কিন্তু উনি যদি সত্যিই কাউকে পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য-প্রমাণ এর ভিত্তিতে নিরপরাধ মনে করেন, তাহলে উনার চিন্তা অনুযায়ী প্রফেশনাল আচরণ করাই উনার কর্তব্য।’

তিনি লেখেন, ‘আমি যেহেতু স্বাক্ষ্যপ্রমান এর ডিটেইলস ব্যক্তিগতভাবে পর্যালোচনা করি নাই, আমার আস্থা আছে এমন একাধিক আইনজীবী যদি পর্যালোচনা করে শিশির ভাইয়ের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেন, তাহলে ' শিশির ভাইয়ের জুডিশিয়াল মাইন্ডের জাজমেন্ট' এর ব্যাপারে আমার সিদ্ধান্ত আমি পরিবর্তন করব।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence