প্রেমিকের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের সিদ্ধান্তে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

হাফিজা আক্তার ও অভিযুক্ত পিয়ার সরদার
হাফিজা আক্তার ও অভিযুক্ত পিয়ার সরদার   © সংগৃহীত

মাদারীপুরের শিবচরে প্রেমিকের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আত্মহত্যা করেছে হাফিজা আক্তার নামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাবলাতলা কাইমুদ্দিন শিকদারের কান্দি গ্রামে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দেয় হাফিজা। উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাফিজা গ্রামের চাঁন মিয়া মোল্লার মেয়ে ও চর বাঁচামারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। নিহতের মা নাছিমা বেগম বলেন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতিবেশী আবুল কালাম সরদারের বড় ছেলে পিয়ার সরদার আমার মেয়েকে নষ্ট করে। কিন্তু বিদেশে যাওয়া চূড়ান্ত হওয়ায় পারিবারিকভাবে তার ছোট ভাই আলী সরদার দোষ স্বীকার করে। এ নিয়ে সালিশ বৈঠকে মাতবররা আলীর সঙ্গে হাফিজাকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। প্রেমিকের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ঘর করা সম্ভব নয় বলে সে আত্মহত্যা করেছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এ ঘটনায় শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে শিবচর থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পিয়ার সরদার, তার পরিবারের সদস্য ও সালিশকারীরা পলাতক।

শিবচর থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, প্রেমঘটিত ব্যাপারে হাফিজা আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি। পিয়ার সরদার তাকে ধর্ষণ করেছে কিনা, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বোঝা যাবে। মামলা হয়েছে, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহতের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, হাফিজার সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেম করেছে পিয়ার সরদার। এক পর্যায়ে হাফিজা অন্তঃসত্ত্বা হলে পিয়ারের পরামর্শে গর্ভপাত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা দেখা দিলে সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসায় সালিশ বৈঠক ডাকা হয়। এতে পিয়ার সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে তার ছোট ভাই আলী সরদার নিজেকে হাফিজার প্রেমিক দাবি করে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু হাফিজা বলে, আমাকে নষ্ট করেছে পিয়ার। আমি কেন আলীকে বিয়ে করব? বিয়ে কাউকে করলে পিয়ারকেই করব। পরে মাতবররা জোর করে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বলেন, সম্পর্কের জেরে একবার হাফিজার গর্ভপাত করায় পিয়ার। বিষয়টি সবাই জানে। সালিশ বৈঠকে পিয়ার সব অস্বীকার করে। তবে বিদেশযাত্রা নিরাপদ রাখতে সবকিছু নিজের ওপর নেয় আলী। সালিশকারীরাও কিছু যাচাই-বাছাই না করে আলীকেই বিয়ে করতে বললে আঘাত পায় হাফিজা। এ থেকেই সে  অনেক কষ্ট পেয়ে আত্মহত্যা করেছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence