জুমার নামাজ কবুল হয় যাদের

জুমার নামাজ
জুমার নামাজ  © সংগৃহীত

শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমাবার। এটি মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮) সৃষ্টিজগতের শুরু থেকেই দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। 

জুমাবার শুরু হওয়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত অনেক আদব রয়েছে। যেসব আদব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করা বাঞ্ছনীয়। কিছু আদব লঙ্ঘন করলে জুমার নামাজ অর্থহীন হয়ে যায়।

হাদিসের আলোকে আমরা জেনে নেব যেসব কারণে জুমার নমাজ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি আর কাদের জুমার কোনো সওয়াব নেই।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার সালাতে তিন ধরনের লোক হাজির হয়। একশ্রেণির লোক আছে, যারা মসজিদে প্রবেশের পর তামাশা করে, তারা বিনিময়ে তামাশা ছাড়া কিছুই পাবে না। দ্বিতীয় শ্রেণির লোক আছে, যারা জুমায় হাজির হয়, সেখানে দোয়া মোনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না। তৃতীয় শ্রেণির লোক হলো যারা জুমায় হাজির হয়, চুপচাপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে, কারও ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট দেয় না, তার দুই জুমার মধ্যবর্তী সাত দিনসহ আরও তিন দিন যোগ করে মোট ১০ দিনের গুনাহ খাতা আল্লাহ তাআলা মাফ করে দেন।’ (আবু দাউদ: ১১১৩)

উল্লেখি হাদিস অনুযায়ী, মসজিদে গিয়ে কাউকে কষ্ট না দিয়ে যেখানে জায়গা আছে, সেখানে বসে চুপচাপ বসে মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনলে তাকে আল্লাহ যথাযথ প্রতিদান দেন। অন্যদিকে তামাশাকারীরা বিনিময়ে তামাশাই পাবে। ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিতি হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে ইমামের খুতবার সময় কথা বলে, সে যেন পুস্তক বহনকারী গাধার মতো!’ অন্যত্র তিনি শুনেছেন, তার কোনো জুমা নেই’ (অর্থাৎ তার জুমা বরবাদ হলো) (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ২/১৮৪, হাদিস: ৩১২৩, ৩১২৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে, সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে, জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে, ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে তার এই আমল আগের জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব ছোট পাপ মোচন হবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৩)

আর জুমার নামাজ আদায় করতে হবে একাগ্রতার সঙ্গে। শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে স্থিরতা ও নম্রতার সঙ্গে। মহান আল্লাহর নির্দেশ, ‘তোমরা আল্লাহর সমীপে দাঁড়াও বিনয়াবনত চিত্তে।’ (সুরা বাকারা: ২৩৮)।

প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্দর করে অজু করে, অতঃপর মনোযোগ দিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। (মুসলিম: ২৩৪)

আসলে মুসলমানদের জন্য জুমার দিনটি বিশেষ আমল করার ও ফজিলত অর্জনের দিন। তাই এই দিনে এমন কাজ থেকে দূরে থাকা উচিত, যা ফজিলত লাভে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। বরং জুমার সব আদবের প্রতি লক্ষ রেখে যথাযথভাবে নামাজ আদায় করলেই আল্লাহ তাআলা আমাদের নামাজ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী জুমার আদবের প্রতি লক্ষ্য রাখার এবং যথাযথভাবে নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।


সর্বশেষ সংবাদ