নির্বাচনী রোডম্যাপ-বাজার নিয়ন্ত্রণসহ প্রধান উপদেষ্টার কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাব লেবার পার্টির

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপের পর লেবার পার্টির নেতারা
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপের পর লেবার পার্টির নেতারা  © সংগৃহীত

নির্বাচনী রোডম্যাপ-বাজার নিয়ন্ত্রণসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাব জানিয়েছে লেবার পার্টি। 

শনিবার (১৯ অক্টোবর ) বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

এসময় বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম ছাড়াও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপে রাষ্ট্র সংস্কারে স্বল্প মেয়াদে বাংলাদেশ লেবার পার্টির পক্ষ থেকে ১৮ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।

এগুলো হল, কালোবাজারি সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, টিসিবি, ভোক্তা অধিকার ও ট্যারিফ কমিশনে সক্রিয় ও রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

আগস্ট বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী ১৭ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত আহত ও নিখোঁজের তালিকা প্রকাশ করে আর্থিক সহযোগীতা ও প্রতি পরিবার থেকে অন্তত ১ জনকে চাকরি দিতে হবে। আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

অন্তবর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারে কাজের পরিকল্পনা ও নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে।

গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ ও ভোটাধিকার হরণে জড়িত ১৪ দল ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার ও বিচার করতে হবে।

সরকারের কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা ও আস্থা বাড়াতে বিতর্কিত ও অনভিজ্ঞ উপদেষ্টাদের অপসারণ করে রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে দক্ষ, কর্মঠ ও অভিজ্ঞদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের পরিসর বাড়াতে হবে।

শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আমলে দুর্নীতি, লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া মাফিয়া, অর্থপাচারকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গত ১৫ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে গত ১৫ বছরে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত দলবাজ, দুর্নীতিবাজদের অপসারণের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সরকারি-আধা সরকারি চাকরিতে মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে নিয়োগের সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি ও নিয়োগ কমিশন গঠন করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সব নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

রদবদলের নামে ডিসি-এসপিসহ পুলিশ ও প্রশাসনে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

দুদক পুনর্গঠন করে উপযুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে।


যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধাসহ ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে গার্মেন্টস ও পণ্য রফতানির সুযোগ সৃষ্টিসহ নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান করে জি টু জি পদ্ধতিতে বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে হবে।

সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে স্থায়ী ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আইন প্রবর্তন ও সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে।

সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবসরের ৫ বছরের মধ্যে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ বেআইনি ঘোষণা করতে হবে।

জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী দল বা জোটকে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ৫১ শতাংশ ভোট প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, অন্যথায় নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।

রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে নিয়োগের বিধান প্রবর্তন ও নির্বাচনী আচারণ বিধি প্রতিপালনে ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র আইন ২০২৩ বাতিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে রাখতে হবে।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে।

দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও সংসদের মেয়াদ চার বছর করতে হবে।

যেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই, সেখানে দূতাবাস সেবা প্রদান ও আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ