ছেলের সঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন অদম্য মা

শেফালী আক্তার ও মেহদী হাসান মিয়াদ
শেফালী আক্তার ও মেহদী হাসান মিয়াদ  © সংগৃহীত

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে পাস করেছেন মেহদী হাসান মিয়াদ। এই পরীক্ষায় পাস করেছেন তার মা শেফালী আক্তার। তারা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার কালাদহ গ্রামের বাসিন্দা। মা ও ছেলে একসঙ্গে এইচএসসি পাস করায় এলাকাবাসীর প্রশংসায় ভাসছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, মা শেফালী আক্তার ফুলবাড়িয়া কালাদহ জনতা মহাবিদ্যালয় কারিগরি শাখা থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন জিপিএ ৪.৩৩। আর ছেলে মেহদী হাসান মিয়াদ ঢাকার মিরপুরে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের মানবিক শাখা থেকে পাস করেছেন। তিনি পেয়েছেন জিপিএ ৪.৮৩।

জানা যায়, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার শিবরামপুর গ্রামের দরিদ্র নুরুল ইসলামের স্ত্রী শেফালী আক্তার। তিনি স্থানীয় শুশুতি বাজারে সাফা মেডিক্যাল সেন্টারের রিসেপশনের কাজ করেন। স্বামী শুশুতি বাজারে ছোট্ট একটি লাইব্রেরির দোকান করেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে অনেকটা অভাবের সংসার তাদের।

সূত্র জানায়, অষ্টম শ্রেণি পাস শেফালী আক্তার একটি এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করে সংসারে সহযোগিতা করতেন। পরে এনজিওতে একই পদে এইচএসসি পাস সার্টিফিকেটধারীদের নিয়োগ দেওয়া হলে তার চাকরি চলে যায়। এরপর তিনি প্রতিজ্ঞা করেন এইচএসসি পাস করবেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে শুশুতি বাজারে সাফা মেডিক্যাল সেন্টারের রিসেপশনে বিকালের শিফটে কাজ নেন তিনি।

আরও পড়ুন: এইচএসসির পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নেবেন?

এর মাঝে তার লেখাপড়া করার ইচ্ছা জাগে। কিছুদিন পর আছিম বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কারিগরি শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন শেফালী আক্তার। তখন তার ছোট ছেলে মেহদী হাসান মিয়াদ শুশুতি উচ্চবিদ্যালয়ের মানবিক শাখার নবম শ্রেণির ছাত্র। বড় ছেলে শাকিল হাসান মৃদুল তখন অনার্সের শিক্ষার্থী। সেই থেকে চাকরির পাশাপাশি ছেলেদের সঙ্গে নিজেও লেখাপড়া চালিয়ে যান।

মা শেফালী আক্তার বলেন, শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না থাকায় চাকরি চলে যায়, স্বামী সন্তানের কাছে লজ্জায় পড়ে যাই। পরে সিদ্ধান্ত নিই লেখাপড়া করবো। এইচএসসি পাস করার খবরে গ্রামের মানুষও খুশি, আমাদের পরিবারে এখন অনেক আনন্দ।

গ্রামবাসীরা জানান, শেফালীর মনোবল ও দৃঢ়তাই তাকে এই সফলতা এনে দিয়েছে। আগামীতেও শেফালী লেখাপড়া চালিয়ে যাবেন, এমনটাই প্রত্যাশা করেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence