গুরুতর আহতদের জন্যও শেখ হাসিনার বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার, নেয়নি অনেকে

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজিম ও তার স্ত্রী
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজিম ও তার স্ত্রী  © টিডিসি ফটো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে গত ২৭ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আহত প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেন তিনি। তবে এই অর্থ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকেই গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। সূত্রের তথ্য, জুলাই আন্দোলনে গুরুতর রোগীদের জন্য শেখ হাসিনা সরকারের বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার টাকা।

গত ২৮ জুলাই ঢামেকের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের ১০২ ও ১০৩ নম্বর কক্ষে গিয়ে আহত এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢামেক সূত্রে জানা যায়, ২৭ জুলাই বিকেলে হাসপাতালে যান শেখ হাসিনা। সেখানে ক্যাজুয়ালটি বিভাগের দুটি কক্ষে চিকিৎসাধীন আহতদের খোঁজ-খবর নেন। এ সময় আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেন তিনি। প্রায় প্রত্যেকেই এই অর্থ গ্রহণ করলেও গুরুতর আহত অনেকেই টাকা নেয়নি।

‘প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন। আমাদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থ দিতে চেয়েছিলেন। তবে আমি সেটা নেইনি।’ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে গুলি করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। আবার অনুদান দিতে এসেছে। যে অর্থ দিচ্ছেন, তা দিয়ে কোনো কাজেই আসবে না। সেজন্য টাকা নেইনি।’- আহত নাজিমের স্ত্রী

ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের ১০৩ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন নোয়াখালীর মাইজদিতে গুলিবিদ্ধ নাজিমের স্ত্রী গত ২৮ ‍জুলাই ‍দুপুরে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন। আমাদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থ দিতে চেয়েছিলেন। তবে আমি সেটা নেইনি।’ আর্থিক অনুদান না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে গুলি করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। আবার অনুদান দিতে এসেছে। যে অর্থ দিচ্ছেন, তা দিয়ে কোনো কাজেই আসবে না। সেজন্য টাকা নেইনি।’

১০২ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন আরেক ব্যক্তির মা জহুরা বেগম জানিয়েছিলেন, ‘পুলিশ যার নির্দেশে গুলি চালিয়েছে, তার কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য অর্থ নেব? মা হয়ে এটা আমি পারিনি। ছেলের চিকিৎসা করতে টাকা ধার করেছি। তবুও শেখ হাসিনার আর্থিক অনুদান নেইনি।’

মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)’-এর এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৬ জুলাই থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮৭৫ জন নিহত এবং ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মোট ৭৭২ জনের মৃত্যুর ধরন সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৯৯ জন বা ৭৭ শতাংশ গুলিতে নিহত হয়েছেন। ৬১ জন (৮ শতাংশ) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ৮৫ জনকে (১১ শতাংশ) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অন্যান্য কারণে মারা গেছেন ২৭ জন (৪ শতাংশ)।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ৩২৭ জন এবং ৪ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (অনেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে মারা যান) ৫৪৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ৭৭ শতাংশ গুলিতে মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে ১৯ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মৃত্যুহার ৫৩ শতাংশ। আর ৩০ বছরের মধ্যে বয়স ধরলে, নিহতের হার দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী এবং এ হার ৫২ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন গুলিতে এবং পুলিশের হামলায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence