‘আই লাভ রাঙ্গামাটি’ ট্যুরিস্ট পয়েন্টে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

  © জনসংযোগ

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন আসামবস্তি-কাপ্তাই সংযোগ সড়কের ‘আই লাভ রাঙ্গামাটি’ ট্যুরিস্ট পয়েন্টে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাঙ্গামাটি ও বন বিভাগ, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের যৌথ উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৪ এর শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার (৭ জুলাই) রাঙ্গামাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. জাহিদ কালামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পার্বত্য রাঙ্গামাটি-২৯৯ আসনের মাননীয় সাংসদ দীপংকর তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা, ৩০৫ পদাতি বিগ্রেড রাঙ্গামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার সোহেল আহমেদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান এবং পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ। 

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৪ এর আওতায় রাঙ্গামাটির আসামবস্তি টু কাপ্তাই সংযোগ সড়কের ১৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৩ হাজার দেশি ও বিদেশি ফুল, ফল, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপণ করা হবে। এসব চারার মধ্যে রয়েছে-পাকুর, অশ্বত্থ, বট, হিজল, রক্তকরবী, গর্জন, নাগলিঙ্গম, অর্জুন, বহেরার মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছ। রয়েছে তাল, বুদ্ধ নারকেল, নারকেলের মতো উপকারী বৃক্ষ, রয়েছে জারুল, বকফুল, সোনালু, আমলকী, লাল সোনাইল, কাঠবাদামের মতো শোভা বর্ধনকারী উদ্ভিদ। আরও রয়েছে ট্যাবুবুইয়া, জাকারান্ডা, গোস্তাভিয়া, রুদ্রাক্ষ, হলুদ ক্যাশিয়া, ক্যামেলিয়া, হ্যামেলিয়া, উইস্টেরিয়ার মতো শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষ হিসেবে পৃথিবীব্যাপী সমাদৃত বিদেশি বৃক্ষ।

অনুষ্ঠানটি আলোচনা ও বৃক্ষরোপণ দুটি পর্বে বিভক্ত করা হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ১ম পর্বের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন রাঙ্গামাটি দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহেদুর রহমান মিয়া। তিনি জানান, দুই দিকে জলাভূমি আর মাঝখানে রাস্তা থাকায় এ সংযোগ সড়কটি ‘ইকো-টোন’ নামীয় একটি ভৌগোলিক আকৃতিতে অবস্থান করছে। তাই এ রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার প্রতি আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে।

প্রধান অতিথি দীপংকর তালুকদার বলেন, নান্দনিক এ সড়কে যত্রতত্র রিসোর্ট স্থাপন করে সড়কের সৌন্দর্য নষ্ট করা যাবেনা। বিশেষ অতিথি সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, এমন একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি এবং ধন্যবাদ জানাই দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বনবিভাগের প্রতি, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি। উনারা নিজেরা সম্পৃক্ত হয়ে এ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন এবং আমাকেও সম্পৃক্ত করেছেন।

রাঙ্গামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার সোহেল আহমেদ বলেন, খুবই চমৎকার উদ্যোগ। রোপণের পর পরিচর্যা করাও জরুরি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এসব রোপণকৃত চারার নিয়মিত খোঁজ-খবর নিব। রাঙ্গামাটি পার্বত্য

জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, এ ধরনের চর্চা শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি। ট্যুরিস্ট পুলিশ রাঙ্গামাটি রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. মহিউল ইসলাম বলেন, নান্দনিক এ সড়কটিতে বড় কোন গাড়ি প্রবেশ করতে পারেনা। ফলে অনেক ট্যুরিস্ট বড় বাস কিংবা কোস্টার নিয়ে এ সড়কে প্রবেশ করতে পারেনা। তাই এ সড়কটি প্রশস্তকরণের প্রস্তাব করছি। 

এলজিইডি, রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ শফি বলেন, একদিকে পাহাড় এবং একদিকে জলাভূমি আর তার মাঝে আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ, এমন সৌন্দর্যের কারণে অনেক দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী এ সংযোগ সড়কে রিসোর্ট নির্মাণে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন।

এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি ডিজিএফআই এর কর্নেল জিএস মো. আনোয়ারুল ইসলাম, রাঙ্গামাটির কমান্ডার লে. কর্নেল মোহাম্মদ আল মামুন সুমন, ট্যুরিস্ট পুলিশ রাঙ্গামাটি রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. মহিউল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা, এনএসআই রাঙ্গামাটির যুগ্ম-পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ, রাঙ্গামাটি সার্কেলের সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার এবং এলজিইডি, রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ শফি, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী এবং বন বিভাগ, রাঙ্গামাটি অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাগণ। 

১ম পর্বের আলোচনা শেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি মো. জাহিদ কালাম প্রধান অতিথিসহ সকল অতিথিকে নিয়ে বৃক্ষরোপণ স্থলে নিয়ে যান এবং প্রত্যেকে একটি করে বৃক্ষ রোপণ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ