জিম্মিদের স্মার্টলি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে, বললেন মুক্তি পাওয়া নাবিক
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১১:৪৮ AM , আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৬ AM
ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক ও ক্রুর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে তাদের স্বজনেরা বেশ উদ্বিগ্ন। এর আগে একইভাবে জিম্মি হওয়া জার্মান জাহাজ মারিডা মার্গারিটার প্রধান কর্মকর্তা বাংলাদেশি জাফর ইকবাল এখনকার পরিস্থিতি নিয়ে বললেন, ‘জিম্মি থাকা নাবিকদের একটু স্মার্টলি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু এটা সত্য, তাঁদের চরম মানসিক চাপে রাখবে।’
এর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর গ্রুপটির জাহাজ ‘এমভি জাহান মনি’ ছিনতাই করেছিল জলদস্যুরা। তিন মাসের মাথায় মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ছাড়া পেয়েছিল।
তার কিছুদিন আগে জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হন জাফর ইকবাল। তখন জার্মান জাহাজ মারিডা মার্গারিটার ২২ জন নাবিক-ক্রুকে জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তাঁদের মধ্যে জাফর ইকবালসহ দুজন বাংলাদেশি ছিলেন।
আরও পড়ুন: যেভাবে জাহাজের দখল নিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা
জাফর ইকবাল বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে রয়েছেন। ২৩৪ দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বুধবার (১৩ মার্চ) তিনি বলেন, ‘এমভি আবদুল্লাহর নাবিক-ক্রুরা কঠিন সময় অতিক্রম করছেন। জিম্মি অবস্থায় থাকা সবার মানসিকতা একই রকম থাকে না। চাপ নেওয়ার ক্ষমতা সবার একই না। কঠিন সময়টা তাঁদের উতরে যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, নাবিকদের মেরে ফেলবে সোমালিয়ানদের এমন কোনো অভিপ্রায় থাকার কথা নয়। কারণ, তাঁদের মেরে ফেললে তারা লাভবান হতে পারবে না। তাঁদের জিম্মি করেই অর্থ পেতে হবে তাদের। জিম্মি থাকা নাবিকদের একটু স্মার্টলি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু এটা সত্য, তাঁদের চরম মানসিক চাপে রাখবে।
নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে জাফর ইকবাল বলেন, জাহাজ কিংবা জাহাজের পণ্য সবই বিমার আওতায় রয়েছে। কিন্তু মানুষগুলোর প্রাণ হচ্ছে স্বজনদের কাছে শেষ কথা। স্বজনদের মতো জলদস্যুদের কাছেও জিম্মি থাকা নাবিকদের প্রাণ বেশ দামি। জাহাজ কিংবা পণ্য সবকিছুর ক্ষতিপূরণ মিলবে। একমাত্র ক্রুদের জীবন ফেরানো যাবে না। সেটা সোমালিয়ানরাও জানে। তাই তারা এসব মানুষকে বাঁচিয়ে রেখেই তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করবে।
আরও পড়ুন: জলদস্যুর কবলে জাহাজে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের পরিচয়-কেমন আছেন তারা?
গতকাল সন্ধ্যায় জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান ছিল সোমালিয়া উপকূল থেকে ১৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে। এটি ক্রমে উপকূলের দিকে যাচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ২৪ থেকে ৩০ ঘণ্টার মধ্যে জাহাজটি উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবে। সেখানে পৌঁছার পর জলদস্যুরা মুক্তিপণের ব্যাপারে যোগাযোগ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, ভেসেল ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট থেকে এমভি আবদুল্লাহর এ অবস্থান তারা জানতে পেরেছেন।
জাহাজের চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খান এক অডিও বার্তায় জানিয়েছেন, জাহাজে ২০ থেকে ২৫ দিনের খাবার পানি আছে। খাবার আছে ২০০ টনের মতো। পানি-খাবার শেষ হলে বিপদে পড়ার শঙ্কা রয়েছে সবার। মঙ্গলবার পাঠানো এই অডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘সবাইকে বলেছি সবকিছু একটু সাবধানে ব্যবহার করতে। শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়ব আমরা।’