সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ ভারতের দখলে, জানে না কেউ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৪৩ AM , আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১৬ PM
জামদানি শাড়ির পর এবার সুন্দরবনের মধুর ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বত্ব পেয়েছে ভারত। সুন্দরবনের আয়তন ও মধু উৎপাদন সবই বাংলাদেশ অংশে বেশি থাকা সত্ত্বেও নিজেদের পণ্য হিসেবে মধুর আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক নির্দেশক সনদ বা জিআই সনদ পেলো না বাংলাদেশ।
অথচ জিআই সনদের বিষয়ে কিছুই জানে না বাংলাদেশ বন বিভাগ। এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ ও বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বহীনতার কারণে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ, আর ভারত একক ভাবে হাতিয়ে নিয়েছে মধুর জিআই সনদ।
সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩৪৮৩ বর্গ কিলোমিটার পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনায়। যা মোট আয়তনের মাত্র ৩৪ ভাগ। আর বাংলাদেশের বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা অংশে রয়েছে ৬৫১৭ বর্গ কিলোমিটার অর্থাৎ মোট আয়তনের ৬৬ ভাগ। অধিকাংশ জায়গা বাংলাদেশের দখলে থাকার পরেও এই অঞ্চলের মধুর স্বীকৃতি নিয়ে গেছে ভারত।
মধু আহরণের দিক দিয়েও বাংলাদেশ এগিয়ে। এই অংশে প্রতি বছর মধু আহরণ হয় প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন। আর ভারতে গত ৭ বছরে গড়ে মধু সংগ্রহের পরিমাণ ১৫৭ মেট্রিকটন। সব বিবেচনায় বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বন উন্নয়ন কর্পোরেশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে জিআই পণ্য হিসেবে মধুর আন্তর্জাতিক সনদ পেয়েছে তারা।
দেশটির আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়সহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গণমাধ্যম ফলাও করে এ খবর প্রচার করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের জি আই পোর্টালের স্ট্যাটাসেও তালিকাভুক্ত হয়েছে সুন্দরবনের মধুর নাম এমনটিও উল্লেখ করা হয়েছে গণমাধ্যমগুলোর খবরে।
জিআই সনদ নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, আন্তর্জাতিক মহলে পণ্যের ব্র্যান্ডিং, যা থাকলে ক্রেতারা সহজে বিশ্বাস করে এটি আসল পণ্য। তাই বাংলাদেশ সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ পাওয়ার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এমনটা দাবি এ খাত-সংশ্লিষ্টদের।
সুন্দরবন খুলনা বিভাগের বন সংরক্ষক মিহির কুমার গণমাধ্যমকে জানান, জিআই সনদ সম্পর্কে তাদের কিছু জানানো হয়নি। বাংলাদেশ সনদ পেতে কোনো আবেদন করেছে কি না এ বিষয়েও কিছু জানাতে পারেন নি তিনি।
এর আগে টাঙ্গাইলের জামদানি শাড়ি নিজেদের বলে দাবি করে ভারত। এরপর এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয় দেশজুড়ে। তোপের মুখে শেষ পর্যন্ত টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের দাবি করা পোস্ট সরিয়ে নেয় ভারত। এরপর জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আবেদন করেছিলেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল শাড়িকে বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন দেয়া হয়।