যে দোষ করিনি, সেই দোষে শাস্তি পেলাম: ড. ইউনূস
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:১৩ PM , আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৮ AM
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যে দোষ করিনি, সেই দোষে শাস্তি পেলাম। এই দুঃখটা মনে রয়ে গেল। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণার পর এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা আজ সোমবার শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. ইউনূসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায়ের সময় ড. ইউনূস আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আবেদনের পর তাঁকে এক মাসের মধ্যে আপিল করার শর্তে জামিন দেওয়া হয়।
রায় ঘোষণার পর ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায়কে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম আদালতের এ রায় অপূর্ণাঙ্গ। ড. ইউনূস আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাননি।
তিনি আরও বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
রায়ে ড. ইউনূসের পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের যেসব ধারায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, সেসব ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি করেছিল সরকারি সংস্থা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
মামলায় অভিযোগ আনা হয় যে শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাঁদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বাৎসরিক ছুটি দেওয়া, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয় না।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয় না।
অভিযোগের জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে গত ৯ নভেম্বর ড. ইউনূসসহ চার বিবাদী লিখিতভাবে আদালতকে বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী। কারণ, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। তবে গ্রামীণ টেলিকমের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ী কর্মীর মতো ভবিষ্য তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড), আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি), অর্জিত ছুটি ও অবসরকালীন ছুটি দেওয়া হয়ে থাকে। মামলায় নিয়োগ স্থায়ী না করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রশাসনিক ও দেওয়ানি মামলার বিষয়।
আদালতে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়, সামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।
মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত গত ২৪ ডিসেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন।