শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত কক্সবাজারের ৪৩ শতাংশ শিশু
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩২ AM , আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩২ AM
বাংলাদেশের কক্সবাজার এলাকায় শিশু অধিকার পরিস্থিতিবিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি (আইআরসি)। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, কক্সবাজারের ৪৩ দশমিক ২৬ শতাংশ শিশু শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলে দারিদ্র্যের হার বেশি হওয়ায় অনেক পরিবারের শিশুদের পড়াশুনার খরচ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে যায়। দেখা যাচ্ছে, শিশুশ্রমে নিয়োজিত হচ্ছে শিশুরা। তারা কাজ করতে গিয়ে চাকরিদাতার নিকট নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রতিবেদন উন্মোচন করেন মহিলা ও শিশু সুরক্ষাবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি বলেন, সমাজের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক পরিবার মনে করে শিশুদের লেখাপড়ার প্রয়োজনই নেই। দারিদ্র্যের কারণে ১৮ বছরের আগেই শিশুদের কাজে নামতে হয়। মেয়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দেওয়া হয়। বাবা-মাকে শাস্তির আওতায় আনা কোনও সমাধান নয়। তাদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে বুঝাতে হবে। এজন্য সরকার এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাজ করতে হবে।
জরিপে উঠে এসেছে, দুই থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার বেশি। ঠিকমতো খাবার না পাওয়া, পুষ্টিকর খাবার না পাওয়া, কম বয়সে মাদক সেবন এবং পাচারের সঙ্গে জড়িত হওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। কিছু অঞ্চল দূর্গম হওয়ায় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত শিশুরা। সাইক্লোন, বন্যা, অতিবৃষ্টি, পাহাড় ধ্বসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়।
জরিপে ৬৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ শিশু জানিয়েছে, তারা জীবনে কোনো না কোনো দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে। এ সময় মানসিক চাপ, শিক্ষা উপকরণ হারিয়ে ফেলা, ক্ষুধার্ত, আঘাত ও যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা বলেছে শিশুরা।
আরো পড়ুন: ভারী বর্ষণ হতে পারে আজও
প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, শিশু অধিকার ও সুরক্ষা সম্পর্কিত আইন সংস্কারের মাধ্যমে প্রচলিত আইনের সাথে সামঞ্জস্য এনে প্রয়োগ নিশ্চিত করা; শিশুর অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতে অর্থ বরাদ্দ ও দক্ষ জনবল (সমাজকর্মী) নিশ্চিত করা; কমিউনিটি বেইজড শিশু সুরক্ষা মেকানিজম শক্তিশালী করা, ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে সরকার ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি-না, তা পর্যবেক্ষণ করা।
অনুষ্ঠানে আইআরসির কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিনা রহমান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চাইল্ড রাইটস কমিটির প্রধান রবিউল ইসলাম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের জয়েন্ট সেক্রেটারি লাভলুর রহমান, ইউএসএইড ব্যুরো ফর হিউমানিটারিয়ান এসিস্টেন্স’র প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কোঅর্ডিনেটর ফারাহ নাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আইআরসির হেড অফ এডভোকেসি অ্যান্ড কমিউনিকেশন সাবিরা সুলতানা নুপুর সঞ্চালনা করেন।