সমাবেশের বাকি এক দিন, ব্যাপক প্রচারণায় ছাত্রলীগ

সমাবেশ সামনে রেখে প্রচারণায় ছাত্রলীগ
সমাবেশ সামনে রেখে প্রচারণায় ছাত্রলীগ  © টিডিসি ফটো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ময়দানে নিজেদের শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে এবং বিএনপি সহ অন্যান্য সংগঠনকে নিজেদের শক্তিমত্তা দেখাতে এ সমবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। 

আগামীকাল শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হতে যাওয়া এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে অন্তত ৫ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর আগমন ঘটবে বলে জানান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

সেই লক্ষ্যে নিজেদের সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে পহেলা সেপ্টেম্বর সমাবেশকে সামনে রেখে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, প্রতিটি ইউনিয়ন ও প্রতিটি গ্রামে দিন-রাত প্রচারণা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সমাবেশের মাত্র একদিন আগে ছাত্রলীগের সামগ্রিক প্রস্তুতিও প্রায় শেষের দিকে রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

ইতোমধ্যে সমাবেশ সফল করে প্রস্তুতি ও বর্ধিত সভা সম্পন্ন হয়েছে। গত ১০ আগস্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের ‘প্রস্তুতি সভা’ অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় ‘বিশেষ বর্ধিত সভা’, যেখানে সারা দেশ থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী উপস্থিত হন। কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাদে ২৯৮ সদস্য বিশিষ্ট ১৮টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ১২৭টি সমন্বয় টিম গঠিত হয়েছে। গত রবিবার সমাবেশ সফল করতে স্ব স্ব ইউনিটকে বিভিন্ন নির্দেশনাও দিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। 

সমাবেশ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানও নতুন সাজ পেয়েছে। সমাবেশ স্থলে স্টেজ ও নেতাকর্মীদের বসার স্থানে প্যান্ডেল স্থাপনের কাজও প্রায় শেষের দিকে। সম্মেলনের মূল মঞ্চ সাজানো হয়েছে নৌকার আদলে।

আজ বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মঞ্চ, প্যান্ডেল তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। স্থাপন করা হয়েছে সাউন্ড বক্স ও মাইক। কাজ তদারকিতে রয়েছেন ছাত্রলীগের নেতৃত্ব পর্যায়ের নেতারা। সম্মেলনস্থলে প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ও প্যান্ডেল তৈরির কর্মীদের ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের সদস্যরা। প্রায় শ' খানেক সিসিক্যামেরা বসেছে পুরো উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায়। পুলিশের কন্ট্রোলরুমে এগুলোর মনিটর হচ্ছে। 

সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের স্মরণকালের বৃহত্তম ছাত্রসমাবেশের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রেস ব্রিফ্রিং করেন নেতারা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আগামীকালের সমাবেশের মাধ্যমে আমরা দেশে আগমনী বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই যা শেখ হাসিনার পক্ষে ব্যালট বিপ্লবের প্রাথমিক ধাপ হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি হিসেবে ছাত্রসমাজের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাবো এবং তাদের সাথে শেখ হাসিনার পক্ষে আপসহীন থাকবো। শেখ হাসিনার উইনিং কোয়ালিশন আজকের তরুন সমাজ তাদের তারুণ্যের শক্তিতে উজ্জীবিত হয়ে, নৈতিকতায় বলিয়ান হয়ে দেশ বিরোধীদের পরাজয় নিশ্চিত করবে এবং ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে একটি আধুনিক, মানবিক, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধির স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বার্তা সকলের নিকট পৌঁছে দেবে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগামীকালের সমাবেশকে সফল করতে ছাত্রলীগ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ। আমরা লিফলেট বিতরণ করেছি, মাইকিং, পোস্টার টানিয়েও ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছি। সবাই আগামীকাল সমাবেশে আসার জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছে।   

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তুতি শুধু সোহরাওয়ার্দী বা ঢাকা কেন্দ্রিক নয় বরং টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া, সুন্দরবন থেকে বান্ধবন ছড়িয়ে আছে। ফলে আমরা ধারণা করছি আগামীকাল ৫ লাখের অধিক শিক্ষার্থী একযোগে Once Again Sheikh Hasina বলে গর্জে উঠবে যা আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার জয় নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা পালন করবে।

f9b8bbcf-2173-4019-80b3-109044e28b7c

এর আগে, সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মী এই সমাবেশের খবর ছড়িয়ে দিতে আত্মনিয়োগ করবে, রোদ-বৃষ্টি- ঝড়কে উপেক্ষা করবে, রোগ-শোক-ব্যথাকে ভুলে যাবে। ছাত্রলীগই পেরেছে, ছাত্রলীগই পারবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল ইউনিটকে স্ব স্ব ইউনিটে মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা এবং লিফলেট বিতরণের নির্দেশ দেয়া হলো।

সমাবেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থীদের আগমনের লক্ষ্যে মাইকিং করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করতে স্ব স্ব ইউনিটকে ইতোমধ্যে নানা নির্দেশনা দিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়ও এই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে মাইকের মাধ্যমে সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে, বিতরণ করা হচ্ছে লিফলেটও।

সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক রিয়াজ বিন ওয়াহাব ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগ নেত্রীকে দেখাতে চায় যে আজকের ছাত্রসমাজ আওয়ামী লীগকে পুনরায় জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা দেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, আবাসিক হল, স্কুলেও লিফলেট বিতরণ করছি যেনো সবাই সমাবেশ সফল করতে উপস্থিত হতে পারে। তাছাড়া গত কয়েকদিন ধরেই আমরা মাইকিং করে যাচ্ছি যেনো সাধারণ মানুষও এই সমাবেশ সম্পর্কে অবগত থাকে। 

তিনি আরও বলেন, তাছাড়া পোস্টারিং, ব্যানার লাগানো কাজও চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্ব প্রনোদিত হয়ে ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে আমরা ইভেন্ট চালু করেছি। কমিটির সকল নেতৃবৃন্দকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দায়িত্ব দিয়ে সেটা আবার প্রচার সেলের মাধ্যমে আমরা মনিটরিং চালিয়ে চাচ্ছি। আমরা আশাবাদী যে আগামীকালের সমাবেশে ৫ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজয়ের লক্ষ্যে স্লোগান দিবে।

সমাবেশে সর্বোচ্চ নেতাকর্মীদের নিয়ে আসতে দেশের ১২৭টি জেলা সমমর্যাদার শাখায় হচ্ছে আলাদা প্রস্তুতি সভা। গতকাল রাজধানীর তিতুমীর কলেজ শাখায়ও সেই প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন হয়েছে। তিতুমীর কলেজ শাখার বরাতে জানা যায় তারা অন্তত দুই হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া বলেন, সর্বকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশে আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাই। আমরা চাই, এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছ থেকে তিতুমীর কলেজ ইউনিট পুরস্কৃত হতে। এ সমাবেশ আমাদের কোনো ব্যক্তির সমাবেশ নয়, এ সমাবেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সমাবেশ। এ সমাবেশ সফল করা আমাদের দায়িত্ব।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারে বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশ’ নামে ফেসবুকে একটি ইভেন্টও খুলেছে সংগঠনটির নেতারা। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ লেখা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। নেতা-কর্মীরা তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও সমাবেশের বিভিন্ন আপডেট দিচ্ছেন ও অন্যকে উৎসাহিত করছেন। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence