এনসিটিবি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি মুদ্রণ সমিতির

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

সরকারের বিনামূল্যের বই প্রকাশের দরপত্রে কারসাজি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান ও উৎপাদক কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছে বাংলাদেশ মুদ্রণ সমিতি। নানান দাবিতে তারা সংবাদ সম্মেলনও করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির কার্যালয়ে সংগঠনের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব বিষয় উপস্থাপন করেন।

সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনিয়াবাত লিখিত বক্তব্য পাঠে বলেন, অগ্রণী ও কচুয়া প্রিন্টার্স এই দুটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে সক্ষমতার থেকেও বেশি কাজ দেওয়া, নির্ধারিত সময়ের পর বই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিক দণ্ড দেওয়া হলেও এই দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা না করা ও বই সরবরাহে কালক্ষেপণের তথ্য আড়াল করতে এনসিটিবির সফটওয়্যারে কারসাজি করা হয়েছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান এবং উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রকের হস্তক্ষেপ ছাড়া যা কখনো সম্ভব নয়। এসব অনিয়ম-দুর্নীতিতে প্রশ্রয় দেওয়ায় তাদের দ্রুত অপসারণ করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন: জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রাচীর ভাঙ্গার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

সংবাদ সম্মেলনে শহীদ সেরনিয়াবাত আরও জানান, অগ্রণীর ছাপাখানা নোয়াখালীতে থাকার কারণে বোর্ড কর্মকর্তা ও পরিদর্শকরা সহজেই তা পরিদর্শন করতে পারেন না। তাদের কী পরিমাণ মেশিন রয়েছে, সেগুলোতে ছাপা ও বাঁধাইয়ের সক্ষমতা কতটুকু তা যাচাই করা প্রয়োজন।
 
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠান দুটিকে ২০২৪ সালের জন্য প্রায় সাত কোটি বইয়ের কার্যাদেশ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ছাপানোর নির্ধারিত সময় ৭০ দিন। অথচ এ সময়ের মধ্যে তিন কোটি বই ছাপানো এবং বাঁধাই করার সক্ষমতা কারো নেই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বিনা মূল্যের পাঠ্য বইয়ের ৯৮টি লটে ৯৯ শতাংশ কার্যাদেশ পেয়েছে তারা। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের ৫৫ শতাংশ কার্যাদেশ পেয়েছে কচুয়া প্রিন্টার্স।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনসিটিবির এই ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বর্তমান সরকারের শিক্ষাবর্ষের ১ম দিনে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার বিরল সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। জানুয়ারি মাসে বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও কিছু প্রতিষ্ঠানের কারণে এপ্রিল-মে মাসেও শতভাগ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। অথচ এনসিটিবি একাধিক প্রতিষ্ঠানকে কোটি কোটি টাকা জরিমানা করলেও এই দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার আওতার বাইরে রেখেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের দরপত্রে কিছু প্রতিষ্ঠানে মেশিনের বিপরীতে সক্ষমতার বহুগুণ বেশী কার্যাদেশ প্রদান বন্ধ, অনিয়ম ও দুর্নীতির সহায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে নিয়ম ও দুর্নীতির বিচার দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গনি ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান। সদস্য অন্যান্য মুদ্রণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারীরাও এতে অংশ নেন।


সর্বশেষ সংবাদ