দুই ওসিকে দায়ী করে চিরকুট লিখে থানার ঝাড়ুদারের বিষপান

দুই ওসিকে দায়ী করে চিরকুট লিখে থানার ঝাড়ুদারের বিষপান
দুই ওসিকে দায়ী করে চিরকুট লিখে থানার ঝাড়ুদারের বিষপান  © সংগৃহীত

পিরোজপুর সদর থানায় কর্মরত ঝাড়ুদার আল মামুন (৪০) দুই ওসিকে দায়ী করে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আমি নির্দোষ। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক আর পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মো. হোসেন। আমি ইন্দুরকানী থানার ওসির টাকা চুরি করি নাই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি মারা যাওয়ার পর আমার লাশ পোস্টমর্টেম করবেন না। লাশটা আমার মামার বাড়ি দাফন করবেন। মৃত্যুর আগে এ রকমই একটি চিরকুট লিখে গেছেন তিনি। 

সোমবার (৫ জুন) পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার গাবগাছিয়া গ্রামে বিষপানের পর ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান। মামুনের মীম নামে ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে এবং আব্দুল্লাহ আল কাওসার নামে ৮ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

মারা যাওয়া মামুন ইন্দুরকানী উপজেলার গাবগাছিয়া গ্রামের আবুল কালাম শেখের ছেলে। তিনি প্রায় ১০ বছর ইন্দুরকানী থানায় ঝাড়ুদারের চাকরি করার পর দুই মাস আগে ইন্দুরকানী থেকে পিরোজপুর সদর থানায় বদলি হয়ে আসেন। তবে সে বাড়ি থেকে পিরোজপুরে এসে তার দায়িত্ব পালন করতেন।
 
মামুনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, তার স্বামী রোববার (৪ জুন) বিকেলে বাড়িতে ফেরার পর তাকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। এরপর তাকে অনেক জিজ্ঞাসা করার পর তিনি জানান, মসজিদ থেকে একটি জায়নামাজ চুরির অভিযোগে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন তাকে গালমন্দ করার পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় মামুন কোনো অঘটন ঘটাতে পারে এই আশঙ্কায় পরিবারের সদস্যরা পুরো বিকেল এবং রাতেও তাকে পাহারা দেন। 

তবে সকালে বাজারে গিয়ে আগাছা নিধনের ওষুধ কিনে তা পান করেন মামুন। এরপর বাড়িতে এসে তাকে (স্ত্রী) জানালে, দ্রুত মামুনকে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে এবং পরবর্তী সময়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। সেখানে মামুনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে রওনা হন স্বজনরা। পথিমধ্যে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মামুনের মৃত্যু হয়।
 
মামুনের স্ত্রী মরিয়মের অভিযোগ, ইন্দুরকানী থানায় থাকাকালীন ওই থানার ওসি এনামুল হক তার স্বামীর ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। এমনকি তিনি পিরোজপুর সদর থানায় যাওয়ার পরও ইন্দুরকানী থানার ওসি ওই থানার ওসির কাছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে আজেবাজে কথা বলেন, যাতে সেখানেও তার স্বামী নির্যাতিত হন।

আরও পড়ুন: পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় অপমান, স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার

এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক। তিনি বিষয়টি জানার জন্য পিরোজপুর সদর থানা কিংবা হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলেন। অন্যদিকে পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, থানায় চুরি কিংবা মামুনকে গালমন্দ ও মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
 
মামুনের আত্মহত্যার বিষয়টি জেনেছেন বলে জানান পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান। তবে তাকে গালমন্দ কিংবা মারধরের কোনো বিষয় তার জানা নেই বলে জানান এসপি। এ ছাড়া এ বিষয়ে তিনি কোনো অভিযোগও পাননি।
 
পুলিশ সুপার আরও জানান, মামুনের লেখা চিরকুটের বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেনেছেন। মামুন এ বিষয়ে আগে কখনো তার কাছে কোনো অভিযোগও করেননি। চিরকুটের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence