গাজীপুরের পরবর্তী মেয়র কী জায়েদা খাতুনই?

ছেলের সাথে নির্বাচনী প্রচারণায় জায়েদা খাতুন
ছেলের সাথে নির্বাচনী প্রচারণায় জায়েদা খাতুন  © ফাইল ছবি

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ভোটের ফলাফলে এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো থেকে আসা ফলাফলে এখন পর্যন্ত তিনি এগিয়ে রয়েছেন। জায়েদার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারা না পারাসহ নানা কারণে আলোচনায় ছিল এ সিটির নির্বাচন। এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্যও একটি পরীক্ষা ছিল এটি।

নির্বাচনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল হলে নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। আর তার মা জায়েদা খাতুন আলোচনায় ছিলেন ছেলের সাথে মনোনয়ন সংগ্রহের পর থেকেই। এবারের নির্বাচনে মেয়র জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিয়ে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানকে নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেয় ক্ষমতাসীনরা।

আজমত উল্লাহ সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। তরুণ বয়সে টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তিনবার ছিলেন একই দায়িত্বে। এছাড়া গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সমান সংখ্যকবার।

তবে, জায়েদা খাতুনের বিষয়ে ভোটারদের আগ্রহ অনাগ্রাহ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও এখন পর্যন্ত ফলাফলে তার এগিয়ে থাকার ফলে ভোটারদের জিজ্ঞাসা—কে হবেন তাদের নগরের নতুন অভিভাবক? নাগরিকদের আলোচনায় এখন মেয়র পদে কে আসছেন সে বিষয়টি। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ মুহর্তে কে হাসবেন বিজয়ের হাসি তা দেখতে ভোটারদের অপেক্ষা করতে হবে সবশেষ ফলাফল পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় সর্বশেষ প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী- ৪৮০ কেন্দ্রের মধ্যে ১০৫টির ফলাফলে আজমত উল্লা খান (নৌকা) ৪৬ হাজার ১৭৮ আর জায়েদা খাতুন (টেবিল ঘড়ি) ৬১ হাজার ২২১ ভোট পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪৮০টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে চলে ভোটগ্রহণ। কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় এ সিটির ভোট।

সহিংসতার খবর না পাওয়া গেলেও কিছু কিছু জায়গায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোট দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলা, এক বুথের ভোটাররা অন্য বুথে যাওয়া নিয়ে ভোগান্তির সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ শোনা যায়। প্রায় বেশিরভাগ কেন্দ্রেই ইভিএম ধীরগতিতে কাজ করেছে।

সকালে এক প্রতিক্রিয়ায় জায়েদা খাতুন জানিয়েছেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি নির্বাচনী ফলাফল যাই হোক তা মেনে নেবেন। এ সসময় তিনি কেন্দ্রে ইভিএমের ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

আর সরকার সমর্থিত আজমত উল্লা খান বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল থেকে মানুষ ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়েছে। ভোটের যে কোনো ফলাফল অবশ্যই মেনে নেব। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সবসময় জনগণের অপিনিয়নের প্রতি আমি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছি। আজ জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে, আমি সেটা অবশ্যই মেনে নেব। আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলাম।

সিটি কর্পোরেশনের ৪৮০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ৩৩৩ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী আছেন। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে এই নগরের এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার আছে ১৮ জন।


সর্বশেষ সংবাদ