৪৫ শতাংশ পরিযায়ী পাখি কমেছে হাকালুকি হাওরে

৪৫ শতাংশ পরিযায়ী পাখি কমেছে হাকালুকি হাওরে
৪৫ শতাংশ পরিযায়ী পাখি কমেছে হাকালুকি হাওরে  © ফাইল ফটো

পাখি শিকারিদের কারণে হাকালুকি হাওরে অনিরাপদ পরিযায়ী পাখিরা। দিন দিন পাখির সংখ্যা কমতে থাকার ফলে হাওরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা। 

হাকালুকি হাওরে পাখি শুমারি পরিচালিত হয় গত ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি। বাংলাদেশ বন বিভাগ, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এ পাখি শুমারি করে। 

বাংলাদেশের ৭১৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮ প্রজাতির পাখিই পরিযায়ী। শীতকালে পরিযায়ী হয়ে এসব পাখি বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসে বাংলাদেশে। তারা বেছে নেয় হাকালুকি হাওরের জলাশয়কে। প্রায় ১৮১ বর্গ কিলোমিটারের এই হাওরে রয়েছে ছোট-বড় ২৭৬টি বিল। এবারের পাখি শুমারির জরিপে জানা গেছে, হাকালুকিতে এ বছর এসেছে ২৫ হাজার পাখি, যা বিগত বছরগুলো থেকে অনেক কম। বিগত ২০২০ সালে যে সংখ্যা ছিল ৪০ হাজার ১২৬টি এবং কয়েক বছর আগে দেশে এ সংখ্যা ছিল ৫-৬ লাখ। এসব পাখি বেশিরভাগ মৌলভীবাজার ও সিলেটের হাওরগুলোকে মুখরিত রাখত। 

পরিযায়ী হয়ে পাখি কমার পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বর্তমানে প্রতি বছর হাওরে বিলগুলো ইজারা দেওয়া হয়। এতে বেশ লোক সমাগম এবং দিনরাত পাহারার কারণে পরিযায়ী পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না। এছাড়াও ইজারদাদের বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্রও। ফলে প্রতিনিয়ত কমছে হাওরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) পর্যবেক্ষণে জানানো হয়েছে, গত ২০ বছরে সমগ্র বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমেছে ৩৫ শতাংশ। হাকালুকিতে কমেছে ৪৫ শতাংশ। ২০০০ সালের আগে হাওরে গড়ে বিচরণ করত ৭৫-৮০ হাজার পাখি। যার ৮০ শতাংশই হাকালুকি হাওরে। 

পরিযায়ী পাখির সংখ্যা দ্রুত কমার বিষয়ে পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। নদী দূষণ, জাল বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে পাখি শিকার, একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বিলে মাছ আহরণ, ইজারাদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ নিধন, বিলে দিবারাত্রি পাহারা ও জলজ বৃক্ষ নিধনসহ নানান সমস্যার কারণে পরিযায়ী পাখি কমছে। 

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্য ও পরিবেশ কর্মী কামরুল হাসান নোমান জানান, হাকালুকি হাওরের সঙ্গে যে নদীগুলো মিলিত হয়েছে, এই নদীগুলো ময়লার ভাগাড়। প্লাস্টিক, পলিথিন, দূষিত পানি পাখি কমার অন্যতম কারণ। জাল, বিষটোপ ও পটাশ দিয়ে নিয়মিত পাখি নিধনের পাশাপাশি পাখিদের বিচরণ ভূমি জলাশয়গুলো অরক্ষিত থাকায় দিন দিন কমছে পাখির সংখ্যা। হাওরের পরিযায়ী পাখি রক্ষায় স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা থাকতে হবে। এতে বাঁচবে আবাসিক ও পরিযায়ী পাখি।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর হাওরে বিলগুলো ইজারা দেওয়া হয়। এ বছরও হয়েছে। এতে বেশ লোক সমাগম ঘটে। দিনরাত পাহারা দেওয়া হয়। এসব কারণে পরিযায়ী পাখিরা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না। ইজারদার দ্বারা বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কারণে নষ্ট হচ্ছে হাওরের জীববৈচিত্র। ফলে কমছে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence