বাবার লাশ রাস্তায়, পেনশনের টাকা নিয়ে বিবাদে ভাই-বোনরা

এলাকার কয়েকশ মানুষ জড়ো হয়েছেন বাড়িতে
এলাকার কয়েকশ মানুষ জড়ো হয়েছেন বাড়িতে  © সংগৃহীত

পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে টানা ৩০ বছর চাকরি জীবন শেষ করে ৬২ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন মনির আহমদ। কর্মক্ষেত্র থেকে ভাতা হিসেবে পান ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু মারণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গতকাল শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি মারা যান। পিতার মৃত্যুর পরেই বাবার মরদেহের দাফন আটকে দিল ২ ছেলে ৩ মেয়ে। তাদের মধ্যে সেই টাকার ভাগ-বাটোয়ারারা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। 

আজ রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। প্রবাস থেকে অন্য ছেলে ফেরার অপেক্ষা করছেন তারা। ঘটনাটি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কেরানির বাড়ির। 

জানা যায়, আশপাশের এলাকার কয়েকশ মানুষ জড়ো হয়েছেন বাড়িতে। বাড়ির উত্তর পাশে একটি খোলা মাঠে অ্যাম্বুলেন্সে মনির আহমদের মৃতদেহ রাখা হয়। নিহতের ঘরে পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং ছেলে-মেয়েরা বৈঠকে বসেছিলেন। কিন্তু বৈঠকে টাকার সমাধান না হওয়ায় সবাই চলে যাচ্ছিলেন।

মনির আহমদের তিন মেয়ে বেবি আক্তার, লিপি আক্তার ও জোছনা আক্তার। দুই ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও আলমগীর। আলমগীর বিদেশে থাকেন। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে রোববার দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

মৃতের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের (৪০) অভিযোগ, বড় বোন বেবি আক্তার বাবা মনির আহমদের অসুস্থতার সুযোগে কৌশলে এবি ব্যাংক চাতরী আনোয়ারা শাখা থেকে  ৩০ লাখ টাকা তুলে নেয়। এই টাকা সে তার মেয়ের ব্যাংক হিসাবে জমা করেছে। এখন সে অস্বীকার করছে।

তিনি আরও বলেন, বাবাকে সিএসসিআর মেডিকেল থেকে অন্য মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার যে কোনো এক দিন ব্যাংকে নিয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে টাকা তুলে নেয় সে। এখন আমার ছোট ভাইও বিদেশ থেকে আসতেছে। তার পর দাফনের চিন্তা হবে।

তবে অভিযুক্ত বেবি আক্তার বলেন, টাকার বিষয়ে আমি কিছু জানি না, বাবা হয়তো আমার ব্যাংক হিসেবে টাকা দিলেও দিতে পারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় মনির আহমদের লাশ বাড়িতে এনেছে। কিন্তু নিহতের ছেলেমেয়েদের মধ্যে টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সমস্যা চলছে। মৃতের ছেলে একটা বিদেশে আছে, সেও দেশে আসতেছে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান দিদারুল আলম বলেন, আমি রোববার সকালে দুইপক্ষকে অনেক চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারিনি।

কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, মনির আহমদ নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর সন্তানদের মধ্যে টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের ৫০ লাখ টাকা থেকে এক মেয়ে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ