প্রথম আলোতে হামলা: ১৫ আসামি কারাগারে

আসামিরা
আসামিরা  © সংগৃহীত

দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান তাদের জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই সেলিম রেজা। 

আসামিরা হলেন-নাইম ইসলাম, সাগর ইসলাম, আহাদ শেখ, বিপ্লব, নজরুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ, জাহাঙ্গীর, সোহেল মিয়া, হাসান, মোহাম্মদ রাসেল, আব্দুল বাকের শেখ ওরফে আলামিন, রাশেদুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, আবুল কাশেম, প্রান্ত সিকদার এবং রাজু আহমেদ। 

জানা গেছে, আসামি বিপ্লব ও হাসানের পক্ষে অ্যাডভোকেট হোসেন আহামাদ এবং অপর আসামিদের পক্ষে এমদাদউল্লাহ মোল্লাহ, মো.আব্দুল্লাহ প্রমুখ জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন।

রাষ্ট্র পক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, কোনো ভাবেই প্রথম আলোতে হামলা ভাঙচুর হতে পারেনা। কারণ প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য এবং বহুল প্রচারিত পত্রিকা। ডেইলি স্টারকে পৃথিবীর বিভিন্ন দূতাবাসসহ সকলে ফলো করে। তাই এ হামলায় সারা পৃথিবীতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

পিপি বলেন, এ আসামিরা সেখানে ভাঙচুর সহ লুটপাট করা সহ সকল ধরনের ডকুমেন্টসসহ অনেক দামি জিনিসপত্র লুট করে। এমনকি সেখানে যারা সাংবাদিক বা কর্মচারী ছিল তাদেরকে হত্যার হুমকি দেয়। এছাড়াও এদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যান্যদেরকে পোস্ট করে উস্কানি দেয় সেখানে আসার জন্য।

আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জবাব দিয়ে পিপি বলেন, আসামিরা অনেকেই সেখানে লাইভ করে, যেটা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় দেখা গেছে। সুতরাং তাদেরকে এমনিতেই গ্রেফতার করা হয়নি। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ এবং লাইভ দেখে তাদেরকে শনাক্ত করা হয়েছে। 

শুনানিতে আসামিরা একযোগে আদালতে বলেন, আমাদের কোনো অপরাধ নেই, সার্চ করে দেখেন। অপরাধ পাইলে শাস্তি দেন। 

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট ভাবে কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। গণ হারে তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসছে। কোনোভাবেই আসামিরা এ ঘটনার সাথে জড়িত না। এমনকি কোনো ভিডিও ফুটেজেও আসামিদেরকে দেখা যায় নি। এ মামলায় একজন আসামি আব্দুল বারেক রিকশা চালক তাকে রাস্তা থেকে ধরে এনেছে।

তারা আরও বলেন, এছাড়াও যার বিরুদ্ধে টাকা লুট করে টিভি ফ্রিজ কেনার অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা মিথ্যা। সেগুলো নিজের টাকায় কেনা ছিল। যার রশীদ ও রয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আরও বলেন, গ্রেফতার আসামিরা একেক জন দিন মজুর রিকশাচালক। তাদেরকে বিনা কারণে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রবিবার রাতে ঢাকার তেজগাঁও থানায় নাশকতা, সন্ত্রাস বিরোধী আইনসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে প্রথম আলো। মামলা দায়েরের পর ১৫ জনকে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ইন্সপেক্টর আবদুল হান্নান। 


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!