কথা রাখেনি আইসিটি বিভাগ, তবুও থামেননি ইস্ট ওয়েস্টের ছাত্র ফারদ্বীন
- শেখ শাকিল হোসেন
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২১, ১২:৫৫ PM , আপডেট: ২০ মার্চ ২০২১, ০১:০০ PM
রোবটিক্সের সাথেই পথচলা অদম্য এ এস ফারদ্বীন আহমেদের। নিজের চেষ্টায় তৈরি করেছেন অ্যাডভান্স লেভেলের রোবট। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে সেটির আর কোনো উন্নয়ন করতে পারছিলেন না। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন জায়গায় ফান্ডের জন্য আবেদন করেও কোনো সাড়া পাননি। বলছিলাম রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্টের রোবটিক্সের সাবেক এই শিক্ষার্থীর কথা।
ফারদ্বীন ২০১৮ সালে রোবটিক্স ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। হাজার হাজার মানুষ সেই স্ট্যাটাসটি শেয়ার করেছিল। সরকারের আইসিটি বিভাগ থেকে অনুদানের আশ্বাসও মিলেছিল। কিন্তু প্রায় ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও আদতে তিনি কোন ধরণের সহযোগিতা পাননি।
এতকিছুর পরও থেমে থাকেননি এই স্বপ্নবাজ তরুণ। নিজের চেষ্টায় চালিয়ে গেছেন সাধনা। সাফল্যের দেখাও পেয়েছেন। নিজ অর্থায়নে তৈরি করেছেন সামাজিক যোগাযোগ ও সেবাদানে সক্ষম ‘ফারবট-৩’ (FARBOT-3) নামের হিউম্যানয়েড রোবট।
ফারদ্বীন বলেন, রোবটটিতে ‘মেশিন লার্নিং’ এবং ‘প্যারালাল কম্পিউটিং’ ব্যবহার করেছি। রোবটটি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তৈরি করে ফেলেছি নিজস্ব একটি ‘প্যারালাল কম্পিউটিং’ পদ্ধতি যেটি প্রচলিত পদ্ধতিগুলো থেকে আলাদা। এই পদ্ধতি ‘সিঙ্গেল কোর’ এবং ‘মাল্টি কোর’ সব ধরনের ‘মাইক্রোকন্ট্রোলার’ এর জন্য কাজ করে।
রোবটটিতে কৃত্রিম অনুভুতি দেয়া হয়েছে। যার ফলে রোবটটি মানুষের বিভিন্ন আচরণ বুঝে অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। রোবটটিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রশ্ন করলেও বুঝতে পারে। উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্তারনেট দ্বারা সংযুক্ত থাকলে রোবটটি শতকরা ৯৮% থেকে ১০০% সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম। ফারবট-৩ ইন্টারনেটের সংযোগ ছাড়াও ব্যবহার উপযোগী।
ফারদ্বীনের তৈরি রোবটটি ৪টি মোডে ব্যবহার করা যাবে। রেস্টুরেন্ট, অফিস, সেলফ এবং ইউনিভার্সাল মোড। প্রত্যেকটি মোডে রোবটটি আলাদাভাবে আচরণ করে।
ইতোপূর্বে ‘ফারবট’ সিরিজের ‘ফারবট-১’ ও ‘ফারবট-২’ সহ অসংখ্য রোবটটিক্স প্রজেক্ট তৈরি করে দেশে সাড়া ফেলেছিল এই তরুণ গবেষক।
বাংলাদেশে রেস্টুরেন্ট, অফিস-সহ বিভিন্নকাজে অনুভূতি সম্পন্ন রোবটের চাহিদা তৈরি হচ্ছে। বিদেশ থেকে এসব রোবট আমদানি করতে বিপুল পরিমান অর্থ গুণতে হয়। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ফারদ্বীনের ‘ফারবট-৩’ বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করে একদিকে যেমন দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো যাবে তেমনি খরচও কমবে। সাথে সাথে এর মাধ্যমে বাংলাদেশে রোবটিক্সের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।