কলেজছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২২, ০৮:৪৫ PM , আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২২, ০৮:৪৫ PM
বগুড়ায় ধর্ষণচেষ্টার শিকার হওয়ার ঘটনায় লোকলজ্জার ভয়ে লিপি খাতুন (১৭) নামে এক কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বগুড়ার ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত লিপি চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের কৈগাতী গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে ও স্থানীয় জালশুকা হাবিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী। এই কলেজ থেকেই এ বছর জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেছে লিপি।
এদিকে, ধর্ষণচেষ্টার পরেই ওই কলেজছাত্রীর বাবা ফজলুল হক বাদী হয়ে অভিযুক্ত বাবুল ও রফিকুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু পুলিশ এই অভিযোগটি আমলে নেয়নি। পরে স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর খবরে মামলাটি রেকর্ড করে পুলিশ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্রী লিপিকে প্রায় দুই বছর যাবত নানানভাবে বাবুল উত্যক্ত করত। তবে কলেজছাত্রী লিপি বাবুলের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে লিপির বাবা ফজলুল হক স্থানীয়দের নিকটে বিচার দাবি করেন। তবে স্থানীয় মাতব্বররা এ ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেননি। এতে করে বাবুল আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
আরও পড়ুন : ফেসবুকে চাকরি পেলেন খুবি শিক্ষার্থী সালেহীন
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, এরপর ১২ এপ্রিল সকালে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাবুল ও তার সহযোগী রফিকুল কলেজছাত্রীর ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়। নিজেকে রক্ষায় লিপি চিৎকার করলে অন্য লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বাবুল ও রফিকুল দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ ঘটনা জানাজানি হলে লোকলজ্জার ভয়ে কলেজছাত্রী লিপি বিষপান করেন। পরে স্বজনরা উদ্ধার করে তাকে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ১৩ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিপিকে স্থানান্তর করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে লিপির মৃত্যু হয়।
লিপির বাবা ফজলুল হক জানান, গ্রামের মাতব্বরদের কাছে বিচার চেয়ে পায়নি। থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ খোঁজখবর নেয়নি। আমার মেয়ের মতো যেন আর কারো মেয়েকে এভাবে জীবন দিতে না হয়। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা জানান, অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।