ভ্যাকসিন ইউনিট বন্ধ, যা জানাল জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
- আশরাফ আন নূর
- প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১১:০০ PM , আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০৮:৩০ PM

মহাখালীস্থ জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন ইউনিট একসময় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন জলাতঙ্ক, কলেরা ও টাইফয়েডসহ বিভিন্ন ভ্যাকসিন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করত। ২০২০ সালের আগেই সরকারের এক সিদ্ধান্তে এটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে পর্যাপ্ত বাজেট, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবল পেলে প্রতিষ্ঠানটি আবারও সচল হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা বলেন, ২০২০ সালের আগেই সরকার একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন ইউনিটটি বন্ধ করে দেয়। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনো বড় প্রভাব দেখা না গেলেও, দীর্ঘমেয়াদে এই সিদ্ধান্তের কৌশলগত গুরুত্ব অনেক বেশি। তাঁর মতে, এই প্রতিষ্ঠানটি সচল থাকলে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে একটি বিকল্প উৎস হিসেবে কাজ করতে পারত। যা ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারের জন্য সহায়ক হতো। বিশেষ করে বৈশ্বিক মহামারি, সরবরাহ ঘাটতি বা আমদানিনির্ভরতার মতো পরিস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের সক্ষমতা একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়। ভ্যাকসিন ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই বিকল্প উৎসটি কার্যত হারিয়ে গেছে।
অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, ভ্যাকসিন ইউনিটে বর্তমানে যে যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি রয়েছে তার একটি বড় অংশই দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পড়ে আছে। অনেক যন্ত্রই অকেজো হয়ে গেছে যা রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা আধুনিকায়নের অভাবে আর ব্যবহারের উপযোগী নেই। ২০২০ সালে ইউনিটটি বন্ধ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে এখানকার ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এই ইউনিটটি আবার চালু করতে হলে শুধু পুরোনো যন্ত্রপাতি মেরামত করলেই হবে না বরং প্রয়োজন আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ জনবল এবং নতুন প্রকল্পের অনুমোদন।
প্রতিষ্ঠানসূত্রে জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন ইউনিটটি একসময় দেশেই উৎপাদন করত জলাতঙ্ক রোগের টিকা (অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন), কলেরা, টাইফয়েড, ডিপথেরিয়া এবং টিটেনাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিনগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক পরীক্ষিত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ছিল। এই সাফল্য স্বাস্থ্যখাতের জন্য ছিল এক বড় অর্জন।
সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে দেশের জাতীয় টিকাদান কার্যক্রম (ইপিআই) মূলত ইপিআই সেন্টারসমূহের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এসব কেন্দ্র থেকে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ও সাপে কাটা প্রতিরোধী ভ্যাকসিনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. মমিনুর রহমান বলেন, এখানে অনেক পূর্বেই বিভিন্ন ইউনিট সরকার বন্ধ করে রেখেছে। জনবল সংকটের কারণে অনেক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে এ সমস্যার সমাধানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলমান।