গরিবদের বিলিয়ে দিলেন হজ্জের জন্য জমানো সাড়ে ৭ লাখ রুপি

জীবনের সবচেয়ে বড় আশা পূরণে কয়েক বছর ধরে সাড়ে সাত লাখ রুপি জমিয়েছিলেন আরিফ শাহ, তার স্ত্রী রাজিয়া ও পুত্র আকরাম। এ পরিবার ভারতের গুজরাটের সুরাট শহরের বাসিন্দা। তারা ভেবেছিলেন, এই অর্থে সৌদি আরবে গিয়ে হজ্জ পালন করবেন। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সেই আশা পূরণ হলো না।

তবে যে অর্থ সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য জমিয়েছিলেন তা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন আরিফ শাহ দম্পতি ও তাদের সন্তান। তারা ভাবলেন, যে অর্থ আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য জমানো হয়েছিল, সে অর্থ তারই সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় হবে। সে মোতাবেক তারা তাদের জমানো সাড়ে সাত লাখ রুপি বিলিয়ে দিলেন গরিবদের মাঝে।

৪৮ বছর বয়সী আরিফ বলেন, আমরা মক্কা ও মদিনা দর্শনের জন্য মুখিয়েছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাস এতে বাগড়া দিল। আমরা মনে করি, এ বছর সেখানে যেতে না পারাটা আল্লাহ পাকেরই ইচ্ছা। তিনি হয়তো চেয়েছেন আমাদের এই অর্থ যেন অন্য মহৎ কাজে ব্যয় করি।

সংবাদমাধ্যম জানায়, আরিফ শাহ, তার স্ত্রী রাজিয়া ও তাদের সন্তান আকরাম এ বছরের হজযাত্রায় তালিকাভুক্তও হয়েছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ২৪ মার্চ ভারত সরকার লকডাউন ঘোষণা করলে অন্য অনেকের মতো তাদের হজযাত্রার পরিকল্পনাও বাতিল করতে হয়। এর মধ্যে সুরাটসহ বিভিন্ন এলাকায় কর্ম হারানো এবং হতদরিদ্র মানুষের অভাব ও দুঃখ-দুর্দশা ব্যথিত করে এ দম্পতিকে। তখনই তারা তাদের হজের অর্থ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিতে উদ্যোগী হন।

আরিফের ছেলে আকরাম বলেন, লকডাউন ঘোষণা হতেই আমাদের এলাকায় এক নতুন মানবিক সংকট দেখা দেয়। অনেক লোক গৃহহীন ও কর্মহীন হয়ে পড়ে। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেই গরিব-দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর, যেন একজনও অভুক্ত না থাকে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক শ্রমিক আকরাম ২০১৬ সাল থেকে ইউনিটি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে একটি স্থানীয় দাতা সংস্থা পরিচালনা করছেন। এই সংস্থার সহযোগিতায় তাদের হজের জন্য জমানো অর্থে খাবার কিনে তা বিতরণ করতে থাকেন গরিবদের মাঝে।

তাদের এ মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করে পরিবারটিকে চিঠি দিয়েছে গুজরাটের স্থানীয় সরকার। এমনকি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাও আরিফ-আকরামদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। আকরাম বলেন, আমরা শুধু মুসলিমদেরই সাহায্য করিনি, সব ধর্ম সব বিশ্বাসের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। যারা এ সহযোগিতা পেয়েছেন, তারা আমাদের জন্য অনেক দোয়া করেছেন।

আরিফ শাহ বলেন, এই অর্থ জমানোর সামর্থ্য আল্লাহই আমাদের দিয়েছেন। এই অর্থ গরিবদের মাঝে বিলানোর ইচ্ছেও তার। আল্লাহ পাকের তরফ থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়ে আমরা ধন্য। তার স্ত্রী রাজিয়া বলেন, যখন আল্লাহ ডাকবেন তখনই আপনি হজে যাবেন। আমার মনে হয়েছে, আল্লাহ হয়তো চেয়েছেন, আমরা যেন এখন তার বান্দাদের সেবা করি। সেজন্য এ অর্থ গরিবদের মাঝে বিলিয়েছি। এটাও অনেক পুণ্যের কাজ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence