স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের বৈষম্যমূলক ধারার সংশোধন দাবি বিএসিবি’র
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৫ PM , আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৭ PM
‘ফ্যাসিস্ট রেজিমের’ শাসনামলে প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ এর বৈষম্যমূলক ধারার সংশোধন ও যথাযথ সংস্কারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিষ্টস (বিএসিবি)।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের কামাল উদ্দিন গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়। বিএসিবির আহবায়ক কমিটি এ সভার আয়োজন করে।
ড. মেসবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইয়ারুল কবির।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) ও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) -এর নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ড. সোহেল আহমেদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিষ্টি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীম আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।
বিএসিবি’র আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করা অতিথিবৃন্দ
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো অংশগ্রহণ করেন বিএসিবি’র আহ্বায়ক মো: মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো: শফিকুর রহমান ও অধ্যাপক ফাতেমা খান মজলিশ, সদস্য মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ও ড. আব্দুল মোত্তালিব। সভায় সারাদেশের ডায়াগনস্টিক সেক্টরে কর্মরত কয়েকশ বায়োকেমিষ্ট উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ সিয়াম হোসেন।
সভায় বিএসিবি’র যুগ্ম আহবায়ক মো: শফিকুর রহমান ও আহ্বায়ক মো: মাহবুবুর রহমান খসড়া স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ এর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিতে বৈষম্য সৃষ্টিকারী ৯ নং ধারার ৪ নং উপধারা সংযোজিত হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা খাতে ল্যাবরেটরিতে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবায় বায়োকেমিস্টদের অবদান, মেডিকেল ডায়াগনস্টিক ল্যাবের কার্যক্রম এবং ডায়াগনস্টিক রিপোর্টে সিগনেটরি অথরিটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা খসড়া স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ এর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিতে বৈষম্য সৃষ্টিকারী ৯ নং ধারার ৪ নং উপধারা সংযোজিত হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা খাতে ল্যাবরেটরিতে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ল্যাবরেটরিতে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ভুল এবং পরবর্তীতে তা থেকে রোগের চিকিৎসায় সৃষ্ট ঝুঁকি, ক্ষতি, ও সংকট নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
প্রস্তাবিত খসড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিতে ৯ নং ধারার ৪ নং উপধারায় বলা হয়েছে যে, যেকোনো ল্যাবরেটরির রিপোর্ট বিএমডিসির রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ স্বাক্ষর করতে পারবেন না। অর্থাৎ বায়োকেমিষ্টরা যে এতদিন ধরে ল্যাবরেটরি টেস্টের মান উন্নয়নে ভূমিকা রেখে রিপোর্ট সাক্ষর করে আসছেন তা আর করতে পারবেন না। এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত সকলে তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং এব্যাপারে পরবর্তী করণীয় পদক্ষেপ সম্বন্ধে আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য বিএসিবি আহ্বায়ক কমিটি ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, স্বাস্থ্য সচিব (শিক্ষা ও সেবা) এবং স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেছেন। স্মারকলিপিতে এসব দাবির যৌক্তিকতা এবং বিদ্যমান অধ্যাদেশ সংস্কারের গুরুত্বের উপর আলোকপাত করেন।
সভায় বক্তারা প্রণীত খসড়া স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪ এর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিতে সংযোজিত বৈষম্য সৃষ্টিকারী অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য ও বিভ্রান্তিমূলক ৯ নং ধারার ৪ নং উপধারার অপসারণ/পরিমার্জন সংশোধনের মাধ্যমে সেবা খাতে বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে কর্মরত বায়োকেমিস্টদের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন জরুরি বলে একমত হন।
সভায় উপস্থিত সকলে এব্যাপারে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হন এবং সে লক্ষ্যে শিগগিরই গণমাধ্যমের সহায়তা নিয়ে স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইনে যথাযথ সংস্কার না করা হলে সম্ভাব্য ঝুঁকি, ক্ষতি ও সংকটের বিষয় নীতি নির্ধারক ও জনগণের সামনে উপস্থাপন করবার লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।