নোয়াখালীতে ভয়াবহ বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ৪০ কোটি

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াখালীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নোয়াখালীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  © টিডিসি ফটো

নোয়াখালীতে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে  ভিটেমাটি ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নিরাপদ পানি ও খাবার সংকটে পড়া মানুষগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য স্থান নিতে হয়েছিল আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে। সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো হিসেবে জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও ব্যবহার করা হয়েছিল। 

বন্যাকবলিত মানুষের অবস্থান নেওয়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ব্যবহারে জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন ২৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৫ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন ১৭৯ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান নোয়াখালী জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ ইনামুল হাসান।

তিনি বলেন, জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সাথে সমন্বয় করে প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

তবে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। তিনি আরো জানান, বন্যার কবলে পড়ে জেলা শিক্ষা অফিসের ভবন, মসজিদ, গ্যারেজ এবং সীমানা প্রাচীরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার পরিস্থিতি উন্নতি হলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত হিসেব নিরূপণ করা হবে। 

জেলার একাধিক প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠদানের বিভিন্ন আসবাবপত্র, চেয়ার-টেবিল,স্যানিটারি ব্যবস্থা, ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম, ফ্লোর,মোজাইক, কাঠের দরজা-জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভবন সংলগ্ন মাটি সরে যায়। এছাড়াও বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সীমানা প্রাচীরের একাংশ ধসে পড়ে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও গত দুদিনে (শুক্রবার ও শনিবার) ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে আটটিতেই বন্যার পানি বেড়েছে। তবে সবচেয়ে পানি বেশি বেড়েছে জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সদর, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলায়। ফলে এলাকার বন্যার্ত মানুষ সীমাহীন কষ্টে দিন যাপন করছেন।

এর আগে, নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় গত ১৫ দিন বন্যার পানি স্থানীয় জলাবদ্ধতায় রূপ নেয়। এতে এখনো পানিবন্দি রয়েছে ১১ লাখ ৫৫ হাজার মানুষ। ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ হাজার ৪৪১ জন মানুষ অবস্থান করছে। বন্যায় এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ