১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য এক চিকিৎসক

চিকিৎসা প্রদানে সবচেয়ে পিছিয়ে বশেমুরবিপ্রবি

মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় প্রশাসনিক ভবনের দুইটি কক্ষে
মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় প্রশাসনিক ভবনের দুইটি কক্ষে  © টিডিসি ফটো

শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে দেশের প্রায় প্রতিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে নিজস্ব মেডিকেল সেন্টার ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক। তবে এক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র একজন।

অপরদিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৭ জন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৬ জন, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৭ জন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৫ জন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৫ জন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৩ জন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৪ জন এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিপ্রবি) ৪৫৩ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন একজন।

শুধুমাত্র চিকিৎসক সংখ্যাই নয়, চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতেও পিছিয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রায় প্রতিটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েই পৃথক ভবনে মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও বশেমুরবিপ্রবিতে মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় প্রশাসনিক ভবনের দুইটি কক্ষে৷ এছাড়া নেই পর্যাপ্ত ঔষধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামও।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির মেডিকেল অফিসার অভিষেক বিশ্বাস বলেন, আমাদের চিকিৎসক সংকট, রুম সংকটসহ প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামেরও সংকট রয়েছে। ইতোমধ্যে আমি প্রশাসনের সাথে এসব বিষয়ে কথা বলেছি এবং তা সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছি।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মাত্র একজন চিকিৎসক থাকলেও তিনি নিয়মিত অফিসে আসেননা। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে গিয়েও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাধারণ শিক্ষার্থীদের। ছুটতে হচ্ছে সদর হাসপাতালে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সজীবুল ইসলাম সজীব বলেন, কয়েকদিন আগে পরীক্ষা শেষ করে আমি ও আমার এক বন্ধু চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যাই। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় আমরা চিকিৎসা সেবা পাইনি। এছাড়া শুধুমাত্র গতদিনই না ইতোপূর্বেও দুইদিন মেডিকেল সেন্টারে গিয়েও ডাক্তার পাইনি।

এছাড়াও, সম্প্রতি গত ২২ নভেম্বর মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক না আসায় শিক্ষার্থী কর্তৃক অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রসঙ্গে মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি আবেদনপত্রও দিয়েছেন।

আবেদনপত্রে তারা দাবি করেন, দীর্ঘদিন যাবৎ মেডিকেল সেন্টারে নিয়মিত চিকিৎক না পাওয়ায় সেবা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীগণ মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে। এমনকি শিক্ষার্থীরা চিকিৎসক না পাওয়ায় তাদের অফিস থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথাও বলেছে। এমতাবস্থায় তারা সেবা প্রদানের জন্য অফিসে অবস্থান করতে ঝুঁকিপূর্ণ আশংকা করছেন।

নিয়মিত অফিস না করা প্রসঙ্গে ইতোপূর্বে ডা. অভিষেক বিশ্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বা শিক্ষার্থীরা যদি মনে করে এখানে আমি পর্যাপ্ত সেবা দিচ্ছি না তাহলে কর্তৃপক্ষ মেডিকেল সেন্টার অন্য কাউকে দিয়ে পরিচালনা করুক। এমন পরিস্থিতিতেই নতুন করে এই চিকিৎসকের চুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ওই চিকিৎসক ভালো সেবা দিচ্ছেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পরিবারসহ তার ক্লিনিকে বিনামূল্যে সেবা পাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য যেই সংখ্যক ডাক্তার প্রয়োজন তা নেই। সম্প্রতি আমি দুজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার বিজ্ঞাপ্তি দিয়েছি এবং চেষ্টা করছি দ্রুত তাদের নিয়োগ দিতে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence