যশোরের ৩৫ শতাংশ মানুষের শরীরে প্রাকৃতিক ‘অ্যান্টিবডি’
- যবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২১, ০৪:১৭ PM , আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২১, ০৪:২০ PM
যশোরের তিনটি উপজেলার ছয়টি অঞ্চলের প্রায় ৪০০ মানুষের উপর পরিচালিত এক গবেষণায় প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার প্রাকৃতিকভাবে তৈরি ‘অ্যান্টিবডি’ পাওয়া গেছে। এর অর্থ হলো এ ৩৫ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত বা এ ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার এ গবেষণা পরিচালনা করে। মানুষের শরীর থেকে রক্তের নমুনা নিয়ে র্যাপিড অ্যান্টিবডি পরীক্ষা পদ্ধতিতে এই গবেষণা চালানো হয়। করোনার ডেল্টা ধরণের ঊর্ধ্বগতির ফলে মানুষের শরীরে করোনা প্রতিরোধের প্রকৃত হার জানতেই এ ধরনের গবেষণার উদ্যোগ নেয় যবিপ্রবি।
গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল বাড়িতে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে পজিটিভ করোনা রোগী ছিল সেই সকল পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ৩৮ ভাগের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আর করোনা পজিটিভ রোগী সংশ্লিষ্ট বাড়ির পাশের করোনা পজিটিভবিহীন বাড়ির ২৪ ভাগে মানুষের মধ্যে করোনার প্রাকৃতিকভাবে তৈরি ‘অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।
গ্রামের তুলনায় শহরে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি অ্যান্টিবডির শতকরা হার কম। এই গবেষণায় ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। অধিক জনসংখ্যা, মানুষের মাস্ক ব্যবহারের উদাসীনতাসহ স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য করোনা পজিটিভ মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
গবেষক দলটি গবেষণার বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, করোনায় আক্রান্ত বা সংস্পর্শে আসায় তাঁদের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তবে করোনা থেকে বাঁচতে বা ‘হার্ড-ইমিউনিটি’ তৈরির জন্য মানুষের শরীরে কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ‘অ্যান্টিবডি’ থাকা আবশ্যক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, টিকা না নিলে আরও দীর্ঘদিন আমাদের এই মহামারীতে ভুগতে হবে। তিনি মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি বৃদ্ধির জন্য সরকারের গণটিকা প্রদানের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং এ উদ্যোগ নেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীরের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘অ্যান্টিবডি’ শনাক্তকরণের গবেষক দলের সদস্যরা হলেন পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী পিপাসা সুলতানা, সুরাইয়া ইয়াসমিন, লক্ষ্মী সরকার এবং পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী নওশাদ মাহমুদ চয়ন।