ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে আর শিক্ষার্থী বহিষ্কার করবে না বশেমুরবিপ্রবি

ফেসবুক স্ট্যাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে আর কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার না করা এবং শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার রাত নয়টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে গভীর রাতে একটি অফিস আদেশ দেয় প্রশাসন। সেই অফিস আদেশে শিক্ষার্থীদের মোট ১৪ টি দাবি মেনে নেয়ার অঙ্গীকার করা হয়। যার মধ্যে ছাত্র বহিস্কারের বিষয়টিও রয়েছে।

সম্প্রতী, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ কি’ এই বাক্যটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বহিস্কারের সিদ্ধান্তকে অবৈধ, অমানবিক, স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক ও সাংবাদিকতার জন্য হুমকী হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাছির উদ্দীনের বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতার জন্য তার পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন পক্ষ।

এর আগেও শ্রেণিকক্ষ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার দায়ে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রাতে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে গভীর রাতে একটি ফফিস আদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার নুরুদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ১৪ টি বিষয়ের নিশ্চয়তা দেয়া হয়।

বিষয়গুলো হলো, ৬ মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু করা, আবাসিক হলের প্রতি সিটের ভাড়া ১৫০ টাকা এবং গণ রুমে ৫০ টাকা নির্ধারণ, ভর্তি ফি সর্বমোট ১৪ হাজার টাকা এবং সেমিস্টার ফি ২০০০ টাকা করা, বিভাগ উনয়ন ফি রদ করা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার না করা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান না করা,  সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, কোনো শিক্ষক ব্যক্তিগত কারণে শিক্ষার্থীর ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করলে তার শাস্তি নিশ্চিতকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নামে যে টাকা নেওয়া হয় তার হিসাব প্রদান, ভর্তি হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে কোনো শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার নোটিশ না দেয়া, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, অডিটোরিয়াম ও স্টুডেন্ট কমনরুম নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব চিকিৎসা ভবন নির্মাণ, ফেসবুক স্টাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার না করা, প্রতি সেমিস্টারে বাস ভাড়া ৩০০ টাকা করা, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার না করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার নুরুদ্দীন আহমেদ বলেন, ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসন তাদের দাবি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 


সর্বশেষ সংবাদ