পবিপ্রবির ছাত্রী হলে তল্লাশিতে পুরুষ স্টাফ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
- পবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৭:২৩ PM , আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৩ PM
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) আবাসিক ছাত্রী হলে তল্লাশি চলাকালে এক পুরুষ স্টাফের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে কবি বেগম সুফিয়া কামাল হলে প্রভোস্টের উপস্থিতিতে হলের সহকারী প্রভোস্টরা ছাত্রীদের নিয়মিত সিট তদারকি করতে যান। একই সঙ্গে ইন্ডাকশন চুলা ও হিটার জব্দের অভিযানে অংশ নেন তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই অভিযানে এক পুরুষ ইলেকট্রিশিয়ান ছাত্রীদের রুমে প্রবেশ করেন। এছাড়া একটি রুমের তালাও ভাঙেন।
শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন, র্যাগ ডে উপলক্ষে যখন অধিকাংশ ছাত্রী হলে ছিলেন না, তখনই কেন প্রভোস্টদের তদারকিতে আসতে হলো? তাদের অভিযোগ, হলে নিম্নমানের খাবার ও ডাইনিংয়ের টোকেন পদ্ধতির কারণে অনেকেই বাধ্য হয়ে নিজেরাই রান্না করেন।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘খাবারের মান ভালো হলে আমাদের ইন্ডাকশন ব্যবহার করতে হতো না। এতে সময়ও বাঁচত, পড়াশোনাতেও মনোযোগ দেওয়া যেত।’
ফিশারিজ অনুষদের ছাত্রী দিনা বলেন, মেয়েদের হলে পুরুষের প্রবেশ কোনোভাবেই কাম্য নয়। ছাত্রীদের ব্যক্তিগত পরিসরে এভাবে পুরুষদের ঢোকানো অসম্মানজনক।
পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান অনুষদের ছাত্রী রুমালি বলেন, শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার অপরিহার্য। কিন্তু হলে খাবারের মান এত খারাপ যে বাধ্য হয়ে রান্না করতে হয়।
এ বিষয়ে সহকারী প্রভোস্ট ও মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মোছা. নিলয় জামান শান্তা বলেন, ‘সকল শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে যায়নি। বেশ কিছু শিক্ষার্থী হলে থাকায় আমরা নিয়মিত তদারকিতে গিয়েছিলাম। ২৪-২৫ সেশনে ভর্তি হওয়া নতুন ছাত্রীদের সিট বরাদ্দের জন্য কোনো রুমে ফাঁকা সিট আছে কি না, সেটি খোঁজ নিতেই গিয়েছিলাম। সে সময় ইন্ডাকশন, হিটারসহ রান্নার অবৈধ সামগ্রী পেয়ে তা জব্দ করা হয়েছে।’
তালা ভেঙে প্রবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটি রুমে ছাত্রী থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে তালা লাগানো ছিল। বারবার ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়া না মেলায় কোনো অঘটন ঘটেছে কি না, তা নিশ্চিত হতে তালা ভাঙতে হয়। পরে জানা যায়, ওই ছাত্রী প্যানিক অ্যাটাকে ভুগছিল। অসুস্থতার কারণে তিনি দরজা খোলেননি। যদি কোনো অঘটন ঘটত, দায়ভার আমাদেরই নিতে হতো। তাই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তালা ভাঙা হয়। তবে ওই রুম ছাড়া অন্য কোনো রুমে তালা ভাঙা হয়নি।’
পুরুষ ইলেকট্রিশিয়ানের উপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রুম থেকে হিটার খোলার কাজ করার জন্যই ইলেকট্রিশিয়ানকে সঙ্গে রাখা হয়েছিল। তবে তাকে দিয়ে তল্লাশি করা হয়নি। সাধারণত হলে পুরুষ প্রবেশ করলে গার্ড বাঁশি বাজিয়ে ছাত্রীদের সতর্ক করে দেয়। এরপরও যাতে শিক্ষার্থীরা বিব্রত না হয়, ভবিষ্যতে কোনো পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে তদারকিতে যাওয়া হবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসনিক কারণে আমি ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলাম, তাই বিষয়টি খোঁজ নিতে পারিনি। ক্যাম্পাসে ফিরে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেব।’