চুয়েটের লেকে প্রশান্তির বদলে এখন মেলে দুর্গন্ধ, বসায় জায়গাও বেহাল

সৌন্দর্য হারানো চুয়েট লেক ও জরাজীর্ণ বসার স্থান
সৌন্দর্য হারানো চুয়েট লেক ও জরাজীর্ণ বসার স্থান  © টিডিসি ফটো

ছোট ছোট টিলা ও ছায়াঘেরা পরিবেশের জন্য চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে (চুয়েট) অনেকে ‘গ্রিন হ্যাভেন’ বা ‘সবুজ স্বর্গ’ বলে থাকেন। এ স্বর্গের একটি বড় অংশজুড়ে আছে পদ্মপুকুর ও হ্রদ। শিক্ষার্থীদের কাছে এটি ‘চুয়েট লেক’ নামে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে পুর্ব পাশে ২০ হাজার বর্গফুটজুড়ে প্রকৃতির সৃষ্ট এ হ্রদের অবস্থান। 

এক সময় প্রতিদিনের ক্লাস-পরীক্ষার ফাঁকে একটু দম ফেলার জন্য শিক্ষার্থীরা এখানে ছুটে আসতেন। কেউ কেউ হ্রদে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন এবং প্রশান্তিময় সময় কাটাতেন। কারো কারো আবার গানে–আড্ডায় সোনালি বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতো। স্বচ্ছ পানিতে প্রতিফলিত হতো প্রকৃতির সৌন্দর্য। জায়গাটি ছিল ক্যাম্পাসের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।

প্রতিদিনের ক্লাস-পরীক্ষার ফাঁকে একটু দম ফেলার জন্য শিক্ষার্থীরা এখানে ছুটে আসতেন। কেউ কেউ হ্রদে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন এবং প্রশান্তিময় সময় কাটাতেন। কারো কারো আবার গানে–আড্ডায় সোনালি বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতো। স্বচ্ছ পানিতে প্রতিফলিত হতো প্রকৃতির সৌন্দর্য। জায়গাটি ছিল ক্যাম্পাসের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।

এক সময়ের সুন্দর জলাশয় এবং বসার জায়গা বর্তমানে পরিচর্যার অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হ্রদটি এখন ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। পানির স্বচ্ছতা নষ্ট হয়ে ঘোলা ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে মশার উপদ্রবও দিন দিন বেড়ে চলেছে। একই সঙ্গে লেকপাড়ে থাকা বসার জায়গাগুলোও অপরিচ্ছন্ন ও পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা এ জায়গায় বসে সময় কাটানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

স্থাপত্য বিভাগের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত নন্দী বলেন, এক সময় চুয়েট লেক ছিল পরিষ্কার, দীর্ঘ এবং শিক্ষার্থীদের প্রিয় আড্ডাস্থল। নৌকাভ্রমণ, অবসর কাটানো কিংবা বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় লেকপাড় ছিল তাদের অন্যতম আকর্ষণ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লেকপাড়ে ঝোপঝাড় আর ময়লার আধিক্য শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। এখন বেশিরভাগই প্রায় আগাছায় আবৃত ও প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নতত্ত্বে পরিণত হয়েছে।

যন্ত্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী গোবিন্দ মোদক বলেন, এমন সুন্দর জায়গাগুলো ব্যবহার না করার কারণ হচ্ছে, এখানে পর্যাপ্ত পরিচর্যা নেই। যদি এখানকার জলাশয়গুলো পরিষ্কার করা যায় এবং বসার জায়গাগুলো পুনরায় সাজানো হয়, তাহলে এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ভালো আড্ডার স্থান হতে পারে।

আরো পড়ুন: রেজিস্ট্রার পদ নিয়ে হট্টগোল, সেদিন যা ঘটেছিল ইবি উপাচার্যের কার্যালয়ে

চুয়েট লেকের সঠিক পরিচর্যা ও কার্যকর লেকসাইড উন্নয়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ক্যাম্পাসের পরিবেশকে আরো সতেজ ও নির্মল করা সম্ভব বলে মনে করেন নগর অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক শাহজালাল মিশুক। তার ভাষ্য, লেকের চারপাশে শিক্ষার্থীদের জন্য পরিকল্পিত ও স্থাপত্যশৈলী সমৃদ্ধ লেকসাইড উন্নয়ন করা গেলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রশান্তির স্থান হিসেবে গড়ে উঠবে। 

দিনরাত শিক্ষার্থীদের কলরবে মুখরিত থাকবে লেকের চারদিক, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, রোজকার শিক্ষার্থীদের কত শত গল্প-আড্ডা হবে এখানে, কত স্বপ্নের সূচনা হবে লেকের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে। অতিসত্বর প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

লেকটি সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন জানিয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসাইন বলেন, কাজ চলমান আছে। লেকের একটি অংশে কাজ চলছে। এরপর পুরোটি সংস্কার করা হবে। বর্ষাকালে এটি পানি পূর্ণ হয়। এর পাশের হলটিতে যাওয়ার জন্য একটি কালভার্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছি। এ ছাড়া চুয়েটের অন্যান্য লেকগুলো সংস্কারের বিষয়ে আমরা কয়েকটি সংস্থার সাথে যোগাযোগ করেছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence