শিশির মনিরের লড়া সেই ৭ আসামির বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, বিস্ফোরক মন্তব্য ফাইয়াজের 

আবরার ফাইয়াজ
আবরার ফাইয়াজ  © ফাইল ফটো

আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামির পক্ষে হাইকোর্টে আইনি লড়াই করেছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এরই মধ্যে হাইকোর্টে এই মামলার আপিল শুনানি শেষ হয়েছে। মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। ইতোমধ্যে শিশির মনিরকে নিয়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনা। আইনজীবী শিশির মনির ও সেই ৭ আসামি সম্পর্কে মুখ খুলেছেন আবরার ফাহাদের ছোটভাই আবরার ফাইয়াজ।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন আবরার ফাইয়াজ। তিনি লিখেছেন, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবী সংক্রান্ত বিষয়টি আব্বুর থেকে জানতে পারি গত ২৪ তারিখে। তবে আদালতের শুনানি শেষ হয়ে যাওয়ায় এ বিষয়ে কথা বলে কোনো লাভ ছিল না। আবার যে দুই দল আবরার ফাহাদের বিষয়ে সম্পূর্ণ ঐক্যবদ্ধ ছিল, তারাই এই ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে রাজনীতি করুক এমনটাও চাই না বলে এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলাম।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখলাম, এই সুযোগে যেই সাত আসামীর পক্ষে উক্ত আইনজীবী লড়ছেন, তাদেরকেই রীতিমতো নির্দোষ বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাকেই দেখলাম বেশ কয়েকজন মেসেজ দিয়ে বুঝাচ্ছেন যে, সেই সাতজনকে অতিরিক্ত শাস্তি দেওয়া হয়েছে! তো এখানে কয়েকটা পয়েন্ট নিয়ে কথা বলা উচিত।’

আবরার ফাইয়াজ তার ফেসবুক পোস্টে পয়েন্ট আকারে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন। সেসব হলো:

১. প্রথমেই যে কথাটা আসে যে, আওয়ামী লীগ সরকার নাকি জনতুষ্টির জন্য রায় দিয়েছে। অথচ ঘটনা পুরোই উলটো। শেষ মুহূর্তে গিয়ে বেশ কয়েকজনের সাজা কমানোর জন্য স্বয়ং তৎকালীন আইনমন্ত্রী চেষ্টা করেছেন। আসামীর পরিবার ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রীকে ম্যানেজ করা গেলেও, বিচারকের দৃঢ়তার কারণে সুবিধা করতে পারেননি।

২. যেই সাতজনের পক্ষে উনি: (যাদের কথা টেনে ডিফেন্ড করা হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে কিছু অভিযোগ যুক্ত) 

(ক) মেহেদী হাসান রাসেল: তৎকালীন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। যিনি সরাসরি লাশ গুম আর ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। 

(খ) মেহেদী হাসান রবিন: আবরার ফাহাদকে টার্গেটের মূল হোতা। তিনি ৩ অক্টোবরের মিটিংয়ে নির্দেশ দেন আবরার ফাহাদকে গেস্টরুমে আনতে। ভাইয়ার রুমমেট মিজান, এই রবিনকেই জানায় যে ভাইয়াকে শিবির মনে হয় তার। 

(গ) অমিত সাহা: তিনি সেদিন রাতে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু ৫ ঘণ্টার মারার পরে ২০১১ থেকে ২০০৫ এ নিয়ে যাওয়ার পরে অবস্থা দেখে মেসেঞ্জারে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তাকে আরো দুই ঘণ্টা মারা যাবে। (তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আছে)

(ঘ) মাহমুদ সেতু: খুব সম্ভবত তার কথা দিয়েই বলা হচ্ছে যে, জানালা দিয়ে উঁকি দেওয়ায় ফাঁসির রায় হয়েছে। কথা ভুল না, তবে অসম্পূর্ণ। উঁকি দেওয়ার পরে যারা মারছিলেন, তারা তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, ভাই কিছু তো স্বীকার করে না।  তখন তিনি বলেছিলেন, তাহলে আরো মারতে থাকো। 

৩. দেখেন, আমরা কোনোভাবেই চাই না যে কোনো নির্দোষ শাস্তি পাক। আমরা চাই ন্যায়বিচার। তবে একটা বিষয় কী, এই হত্যাকাণ্ডের দায় কী শুধুই ২৫জনের উপরে ছিল? অবশ্যই না। যেই মাত্রার অপরাধে তাদের শাস্তি হয়েছেন বলে আপনারা মনে করছেন, তা সত্যি হলে শতাধিক আসামি হতো। 

৪. কিন্তু এই যে, একজন আইনজীবী ও তার রাজনৈতিক সমর্থকদের ব্যবহার করে যে পুরো বিচার প্রক্রিয়া নিয়েই জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করা হলো, এর দায় কারা নেবে? 

সবশেষ আরবার ফাইয়াজ আরও লিখেছেন, ‘একজন আইনজীবী তার পছন্দ মতো যে কোনো মামলা নিতেই পারেন। এখানে আমার কোনোই আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি যাদের মামলা নিয়েছেন তারা নির্দোষ এটা কীসের আলাপ ভাই! উনি আদালতে অনেক চেষ্টা করেও যে ক্ষতিটা করতে পারেননি, সেটা আপনাদের ‘উনি যাদের মামলা নিয়েছেন তারা অতটাও দোষী না’ প্রমাণের চেষ্টার মাধ্যমে হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, শিশির মনির ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। তিনি জামায়াত ইসলামীর অন্যতম আইনজীবী। এছাড়া সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামী শিশির মনিরকে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তাই আবরার হত্যা মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী হওয়া শিশির মনিরকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে প্রচুর।  


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence