হামলাকারীদের বিরুদ্ধে এখনও ব্যবস্থা নেয়নি হাবিপ্রবি প্রশাসন 

হাবিপ্রবি
হাবিপ্রবি  © টিডিসি সম্পাদিত

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এ ঘটনার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন আকাশ ও সাধারণ সম্পাদক এম এম মাসুদ রানা মিঠুর নেতৃত্বে চালানো হয়। এই হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন৷সেদিন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগের দুঘণ্টা ব্যাপী ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে৷

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পদত্যাগ করলে নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব হাতে গ্রহণ করেন ৷ দায়িত্বগ্রহণের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও আগস্টের হামলার বিচারের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি প্রশাসন ৷বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত ফুটেজ থেকে হামলাকারীদের হাতে লাঠি, সামুরাই, হকিস্টিক সহ দেশীয় অস্ত্রের দেখা পাওয়া যায়৷ বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী একাধিক শিক্ষার্থী তাদের শনাক্ত করলেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ 

এ ব্যাপারে বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থী সুজন ইসলাম বলেন, প্রশাসন শিক্ষার্থীবান্ধব নয়, শিক্ষকরা শুধু তাদের দায়িত্ব ভাগাভাগি নিয়েই ব্যস্ত।  শিক্ষার্থীদের কথা ভাবার তাদের সময় নেই। গত ষোল বছরে ছাত্রলীগ হাবিপ্রবিতে তাণ্ডব চালিয়েছে। তাণ্ডবের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য এক যন্ত্রণাময় জায়গা ছিল এই হাবিপ্রবি। রাত নাই, দিন নাই যখন তখন হলের শিক্ষার্থীদের তাদের প্রোগ্রামে জোর করে নিয়ে যেতো। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কিছু বললেই গুন্ডা বাহিনী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর অত্যাচার করতো। 

তিনি আরো বলেন, ২০২৪ এর কোটা আন্দোলন থেকে শুরু করে সরকার পতন আন্দোলন, ছাত্রলীগ বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। এমনকি হল থেকে আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে বাধা দিতো এবং হলে এনে মারধর করত। ১৫ এবং ১৬ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হাবিপ্রবির ছাত্রলীগের গুন্ডা বাহিনী হামলা করে। শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি, অনেক শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, হামলাকারীদের বিচার নিয়ে এই প্রশাসন সামান্য অগ্রসর হয়নি। আমরা চাই অতিদ্রুত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।"

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মো. শামসুজ্জোহা এ বিষয়ে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ যে হামলা চালিয়ে সে বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করছে। ফুটেজ কালেক্ট করে সত্যতা যাচাই করছে এবং তারা যে তালিকা প্রকাশ করবে সে আলোকে শাস্তির ধরন ও যে বিধান রয়েছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আন্দোলনের পাঁচ মাস অতিক্রম করলেও এখনো এই বিষয়ে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি, প্রক্রিয়াটি এতো দীর্ঘ হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেকে হামলার সাথে জড়িত ছিল আবার অনেকেই নিতান্ত বাধ্য হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এজন্য বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে প্রকৃত অপরাধী শাস্তির আওতায় আসুক, এজন্য বিষয়টি একটু সময় সাপেক্ষ হচ্ছে ৷

সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি ড. মো. শফিকুল ইসলাম শিকদার বলেন, ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বিষয়টি দেখছেন তাদের দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ’


সর্বশেষ সংবাদ