সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত বুয়েটের উপাচার্য
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:০০ PM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:২২ PM
উপাচার্য হিসেবে নিজের শেষ কর্মদিবসে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। আজ সোমবার (২৪ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তি ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে তিনি নিজ কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি স্থগিত করার প্রতিবাদে তার কার্যালয়ের সামনে আন্দোলন শুরু হয়। এসময় অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার নিজ কার্যালয়ে অবস্থান করেছিলেন।
জানা যায়, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বুয়েট সিন্ডিকেটের ৫৪০তম সভায় ২৭-১২-২০২৩ তারিখের পরবর্তী সময়ে নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রাপ্যতার জন্য বিবেচিত হবেন না বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি জানিয়ে গতকাল রবিবার (২৩ জুন) বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি অফিস আদেশ জারি করে। এরপর আজ বিকেলে উপাচার্যের শেষ কর্মদিবসে নীতিমালা-২০১৫ বাতিলের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে, পদোন্নতি স্থগিতের আদেশ বাতিলের পক্ষে সিন্ডিকেটে সুপারিশ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো: ফোরকান উদ্দিন। যদিও এই আশ্বাসকে ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রাত সাড়ে আটটার দিকে উপাচার্য কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে ১০ জনের এক প্রতিনিধি দল সমঝোতার জন্য গেলে সেখানে তাদেরকে এই আশ্বাস দেওয়া হয়। আশ্বাস দেওয়ার পরপরই সাংবাদিকদের সাথে কোনো রকম কথা না বলে চলে যান বুয়েট উপাচার্য। এসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্লোগান দিতে দিতে তার পিছু পিছু যেতে দেখা গেছে।
জানা যায়, ২০১৫ সালের নীতিমালা অনুযায়ী যে পদোন্নতি সিস্টেম ছিল সেটি বাতিল করে পদোন্নতি স্থগিত করেছে বুয়েট প্রশাসন। যার ফলে ২০১৫ সালের নীতিমালা অনুযায়ী যারা পদোন্নতি পেয়েছেন তাদের অবসরের পর সেই পদটি শূন্য থেকে যাবে। ২০১৫ সাল থেকে পদোন্নতির যে অর্গানোগ্রামটি মেনে আসছিলো বুয়েট প্রশাসন ডিসেম্বরের ২৭ তারিখে সেই অর্গানোগ্রামকে বাতিল করে বুয়েট সিন্ডিকেট।
এর আগে, বিকেল থেকেই পদোন্নতি স্থগিতের নীতিমালা বাতিলের দাবিতে ও উপাচার্য অফিস ঘেরাও করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ৬ মাস আগে সিন্ডিকেটে পদোন্নতি বাতিল করা হলেও ছয় মাস পর দায়িত্ব ছাড়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এমন ঘোষণা দেওয়ায় বুয়েট উপাচার্যের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।
আন্দোলনরত কর্মচারীরা জানান, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বুয়েট সিন্ডিকেটের ৫৪০তম সভায় ২৭-১২-২০২৩ তারিখের পরবর্তী সময়ে নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রাপ্যতার জন্য বিবেচিত হবেন না বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি জানিয়ে গতকাল বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি অফিস আদেশ জারি করে।
আদেশে উল্লেখ করা হয়, নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে যাদেরকে পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রদান করা হয়েছে তা অপরিবর্তিত থাকবে। নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে যাদেরকে পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রদান করা হয়েছে, তাদের চাকুরি শেষ হলে, পদত্যাগ করলে, অপসারণ, পদচ্যুত করা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত পদ বিলুপ্ত হবে এবং অর্গানোগ্রামভূক্ত মূল পদ শূন্য হবে।
আন্দোলনরতরা বলেন, আমরা এই নীতিকে বৈষম্যমূলক মনে করি এবং এই নতুন নীতিমালা বাতিল চাই।