বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে বুটেক্স শিক্ষকদের কর্মবিরতি

বুটেক্সে শিক্ষকদের ব্যানার সহকারে কর্মবিরতি পালন
বুটেক্সে শিক্ষকদের ব্যানার সহকারে কর্মবিরতি পালন  © জনসংযোগ

সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার এবং স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুটেক্স শিক্ষক সমিতির আয়োজনে পাঁচ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনে উক্ত কর্মসূচি পালিত হয়।

কর্মবিরতি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সার্বজনীন পেনশনের আওতামুক্ত করে নতুন প্রত্যয় স্কিমের আওতায় আনা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতি চরম বৈষম্য দেখা যায়। এই বৈষম্যমূলক স্কিম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা পেশাকে দ্বিতীয় শ্রেণীর পেশায় রূপান্তরিত করার একটা পাঁয়তারা। এতে শিক্ষকদের চেয়ে দেশ ও জাতির বেশি ক্ষতি হবে। 

তিনি আরও বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের এই আন্দোলন সফল হবে কারণ এ আন্দোলন আমাদের নয়, এ আন্দোলন দেশবাসীর। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থামাবো না, এমনকি আমরা কমপ্লিট  শাটডাউনের কথা ভাবছি যার ব্যাপারে আজকের ফেডারেশনের প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নারগীস জাহান আরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভালো ফলাফল করে তারাই পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারে। কিন্তু এই প্রত্যয় স্কিম চালু হওয়ার ফলে শিক্ষকরা বঞ্চিত হবে। ফলে ভবিষ্যতে আর কোনো মেধাবী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় আসবে না। আশা করি সরকার অত্যন্ত বিবেচনার সাথে আমাদের দাবিগুলো দেখবে এবং সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা থেকে সরে আসবে।

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম বলেন, এই পেনশন স্কিম চালুর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। এমনিতে আমাদের দেশের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে চলে যায়। মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেশে রাখার জন্য আস্থার জায়গা ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে যদি শিক্ষকদের জায়গাটা নড়বড়ে হয় তাহলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশায় আসবে না।

ডাইস অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন বলেন, অনেকদিন থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে যে অবহেলা হচ্ছে আমার মনে হয় তার ধারাবাহিকতায় এই পেনশন স্কিম চালু করা হয়েছে। এটা আমাদের কারো ব্যক্তিগত অথবা কোনো গোষ্ঠীর বিষয় নয়, এটি পুরো দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকরা যদি বৈষম্যের শিকার হয় তাহলে ভালো প্রোডাক্টিভ জাতি তৈরি করা কখনোই সম্ভব নয়। 

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবিব বলেন, নতুন পেনশন স্কিমে ফলে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার আগ্রহ হারাবে। ফলে দেশে মেধা-শূন্যতা তৈরি হবে। আর মেধা-শূন্যতা একটি দেশকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৮ মে) একই দাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন করেছে বুটেক্সের শিক্ষকবৃন্দ।

উল্লেখ্য, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আগের চারটি স্কিমের সঙ্গে ‘প্রত্যয় স্কিম’ নামের একটি প্যাকেজ চালু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই পরবর্তী সময়ে যোগ দেওয়া কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বর্তমান পেনশন ব্যবস্থা থেকে বের করে সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মনে করছেন, এর ফলে আগামী ১ জুলাই এবং তৎপরবর্তীতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence