ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়: অধ্যাপক সাদেকা হালিম

বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা
বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা  © টিডিসি ছবি

বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার দৃষ্টিতে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস২০২৩ উপলক্ষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স (সিপিএস) বিভাগের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আজ শনিবার (১৯ আগস্ট) বিভাগের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন এবং ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক।

অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এবং মাভাবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমনা শারমিন।

অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু হিন্দু মুসলমান এর মধ্য ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতেন। তিনি তাঁর ৭ মার্চের ভাষণে সকলকে যার যা কিছু আছে তা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন। তিনি নির্দিষ্ট কোনো ধর্মাম্বলীদের এ কথা বলেননি। বরং দল মত নির্বিশেষে এক অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষতার দেশ গড়তে চেয়েছিলেন। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী মুসলিম লীগের নাম থেকে মুসলিম বাদ দেয়ার কারণ হচ্ছে সকল ধর্মের মানুষ যাতে যার যার ধর্ম পালন করতে পারে এবং নিজ ধর্মের মতো অন্য ধর্মকেও সম্মান করতে পারে যা তাঁর প্রগতিশীল চেতনা। আর এই চেতনার প্রেক্ষিতেই বঙ্গবন্ধু ৭২ এর সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূলনীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেন। 

এছাড়া শিক্ষকরা এখন শিক্ষকতা নয় বরং চাকরি করেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেই সাথে তিনি দেশে নারী পুরুষের বৈষম্য, পাহাড়ী জনগোষ্ঠীদের অধিকার হরণ, আইন ও অপরাধ নিয়ে গবেষণার বিষয়ে বিস্তর আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশ নয় বরং বাংলাদেশ গঠনের রূপরেখাও দিয়ে গেছেন। ১৫ আগস্ট তাঁকে হত্যা করা হলেও তাঁর আদর্শকে ছিনিয়ে নিতে পারেনি। ১৫ আগস্টে সেই নৃশংস হত্যাকান্ডে পরিবারের সব সদস্য হারিয়ে দুই বোন কীভাবে এই শোক বুকে নিয়ে বেঁচে আছেন? দেশের মানুষকে ভালোবাসেন বলেই তারা শক্ত আছেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা আমাদের দরকার। ধর্মকে কেন্দ্র করে যে রাজনীতি ও কালো থাবা জঙ্গীবাদ থেকে শুরু করে অনেক কিছুর উত্থান ঘটিয়েছে এ দেশে তা এখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে ছোট মানুষ এবং বড় জাতি একসাথে যায় না। জাতি হিসেবে বড় হতে হলে মানুষ হিসেবেও আমাদের বড় হতে হবে। আর এই চেতনা আমরা পাবো বঙ্গবন্ধুর ৭২-এর সংবিধানের ৪টি মূলনীতি থেকে। 

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে আমরা এমন একটি সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবেনা। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অধিকারে অসমতা থাকবেনা।


সর্বশেষ সংবাদ