ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ পবিপ্রবি, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ পবিপ্রবি, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি
ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ পবিপ্রবি, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি   © টিডিসি ফটো

বসন্তের আগমনীতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নতুনভাবে সবুজে সারিত হলেও ক্রমাগত ধুলাবালির ছড়াছড়িতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। হঠাৎ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে যে কেউই মনে করবে রোদের মাঝেও তীব্র কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে। ধুলোবালিতে নাজেহাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কমছে অক্সিজেন, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

কখনো হালকা, আবার কখনো চক্কর দিচ্ছে ঘূর্ণি বাতাস। সাথে নেচে উঠছে বালু আর ধুলা। বাড়ছে বায়ু দূষণ, ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। যেখানে নিঃশ্বাস নেওয়ার উপায় নেই। এছাড়া এসব রাস্তায় রিক্সা, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন চলাচলের কারণে ধুলাবালির পরিমাণ বাড়ছে আরও বহু গুণ। এতে প্রতিদিনই ছড়িয়ে পড়ছে ধুলার দূষণ। 

সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ফটক থেকে দ্বিতীয় ফটক, টিএসসি থেকে একাডেমিক অথবা সৃজনী বিদ্যানিকেতন থেকে এম. কেরামত আলী হল সব জায়গায় যেন ধুলোর মহড়া। বাদ যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ার সেন্টার কিংবা কেন্দ্রীয় মসজিদের সম্মুখ সড়ক। এসব সড়কে মাস্ক ছাড়া বের হওয়া কষ্টকর। গত দুদিন ধুলোর বিস্তার ঠেকাতে সন্ধ্যার পর পানি ঢালা হলেও সেগুলো যথেষ্ট নয় বলে অভিমত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের। 

মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এ ধরণের বায়ু দূষণ বাড়ছে। ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর একনেটে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়নের জন্য ৪৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য দুটি বহুতল ভবন, খামার বাড়ি সম্প্রসারণ, সুফিয়া কামাল হলের সম্প্রসারণ, একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও সালসাবিল লেকের মাটি ভরাটের কাজ চলছে।

নিয়মিত মাটি ও বালু আনা নেওয়া করায় সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের রাস্তা মাটি ও বালুতে ঢাকা পড়ে গেছে। ফলে হালকা বাতাস কিংবা যানবাহন চললেই বাতাসে ধুলো ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসের আশেপাশে সড়কের পাশে অনেক খাবারের দোকান রয়েছে। সেগুলো শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় খাচ্ছে। এসব ধুলো-বালি যুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।

ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাস্তা থেকে সৃষ্ট ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। নিয়মিত পানি ছিটিয়ে না দেওয়ায় ধুলাবালির পরিমাণ বেড়েই চলেছে প্রতিনিয়ত। 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোতে প্রচুর ধুলাবালির কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন তারা। এমনকি রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করাও মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নিঃশ্বাসে অক্সিজেনের পরিবর্তে ধুলাবালি গ্রহণ করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ার সেন্টারের চীফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ এ টি এম নাসিরউদ্দিন বলছেন, গত দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ারে আসা শিক্ষার্থীর একটি বড় অংশই ধুলোবালি ও এ্যাজমা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আসছেন। এসব ধুলোবালিতে শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের বেশী ঝুঁকিতে ফেলছে। তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও আ্যাজমা সহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি রয়েছে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হলের ঠিকাদার মোঃ আমীর হোসেনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ধুলোবালি ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি আমরা অবহিত। বিষয়টি সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ক্যাম্পাসে ধুলোবালির কারনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যে সমস্যাগুলো হচ্ছে তা নিয়ে গত রবিবার পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস বিভাগের সভায় আলোচনা হয়েছে। সেখানে এই ধুলোর বিস্তার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ সমূহ নিয়ে মূল্যায়ন হয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence