পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ হচ্ছে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ১০:০৭ AM , আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫, ০৬:১৮ PM

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠনের পর এবার এ পদে যোগ্যতাও নির্ধারণ করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে এ মানদণ্ড বিচার করা হবে। নির্ধারিত যোগ্যতার বাইরে এ পদে কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়-২) শারমিনা নাসরীন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘উপাচার্য নিয়োগের যোগ্যতার বিষয়টি আমার পর্যায় থেকে নির্ধারণ হয় না। এ বিষয়ে আমাদের সিনিয়র সচিব ভালো বলতে পারবেন।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের অন্যতম শর্ত রাখা হয়েছে পিএইচডি ডিগ্রি। যিনি যত ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করবেন, ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি ততোটাই এগিয়ে থাকবেন। ভিসিদের গবেষণার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
জানা গেছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও গবেষণা-প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার মাপকাঠির কোনো সুনির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক নেই। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত চারটি স্বায়ত্তশাসিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ নিজ আইনে বিধান রয়েছে যে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট দ্বারা নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ পাবেন। যদিও এটিও মানা হয় না।
আর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের কোনো মানদণ্ডই নেই। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি উপাচার্য নিয়োগ দিলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা পাঠানোর পর প্রধান উপদেষ্টা (প্রধানমন্ত্রী) সম্মতিক্রমে তিনি তা করে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, উপাচার্যরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান। তাদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে সরকারকে বিপদে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের নিয়োগ নিয়েও বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। যোগ্য এবং সৎ ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিতেই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন থেকে ভিসিদের শিক্ষাগত, অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং গবেষণা কার্যক্রম বিবেচনায় নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: এক বোর্ডে বেশি ফেল, অন্য বোর্ডে কম— যা বলছে এনটিআরসিএ
থাকতে হবে পিএইচডি, প্রকাশ হতে হবে গবেষণাপত্র
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, উপাচার্য নিয়োগের অন্যতম শর্ত রাখা হয়েছে পিএইচডি ডিগ্রি। যিনি যত ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করবেন, ভিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি ততোটাই এগিয়ে থাকবেন। ভিসিদের গবেষণার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। এক্ষেত্রে কিউ১ থেকে কিউ৪ এ কতগুলো গবেণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে, সেটিও বিবেচনা করা হবে।
ভিসি নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ নীতিমালা তৈরির সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানান, পিএইচডি, গবেষণা ছাড়াও আরও বেসিক কিছু বিষয় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ২০ বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে কারো যদি ১৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ৫ বছর গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে তিনিও আবেদন করতে পারবেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, খুব অল্প বয়সে ভিসি হওয়া যাবে না। ভিসি পদে আবেদনকারীদের বয়স ন্যূনতম ৪৫ বছর হতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসিক ও অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কারো যদি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ও একাডেমিক দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে সেটি অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পাণ্ডিত্যের অভিজ্ঞতা থাকলে সেটিও বিবেচিত হবে অতিরিক্ত যোগ্যতা বলে।