সাংবাদিক-আইনজীবীসহ দ্বৈত পেশায় যুক্ত শিক্ষকদের খোঁজে জেলা শিক্ষা অফিস
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৩ AM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১৪ AM
গাইবান্ধার স্কুল-মাদরাসার যেসব শিক্ষক ও কর্মচারী পাশাপাশি সাংবাদিকতা বা আইন পেশায় জড়িত, তাদের তালিকা চেয়ে জরুরি ভিত্তিতে তথ্য চেয়েছে জেলা শিক্ষা অফিস। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২৫ অনুযায়ী, শিক্ষকদের কোনো আর্থিক লাভজনক দ্বিতীয় পেশায় নিয়োজিত থাকার অনুমতি নেই—এই বিধানকে প্রাধান্য দিয়েই এ তদন্ত শুরু হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশবলিতে জেলার সাত উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাদের আওতাধীন এমপিওভুক্ত সব বিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্য থেকে সাংবাদিকতা ও আইন পেশায় সংশ্লিষ্টদের পূর্ণ তথ্য আগামী ১৪ ডিসেম্বর বিকাল ২টার মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে।
গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা অফিসার নিশ্চিত করে জানান, সরকারি নীতিমালা অনুসারে কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সাংবাদিকতা, আইনচর্চা বা অন্য কোনো আয়বর্ধক পেশায় নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। নীতিমালা লঙ্ঘনের বিষয়টি যাচাই ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেই এ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক সংগঠনের সূত্রে জানা যায়, জেলার কিছু শিক্ষক স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বা আইন সহকারী হিসেবে কাজ করছেন বহু বছর ধরে। অনেক ক্ষেত্রে নিম্ন বেতন ও জীবনযাত্রার চাপই তাদের দ্বিতীয় পেশা বেছে নিতে বাধ্য করে। তবে নতুন এমপিও নীতিমালায় এই অনুশীলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শিক্ষক নেতারা এই তথ্য সংগ্রহের পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। একাংশের মতে, নিয়ম মেনে চলা জরুরি। তবে অন্য একাংশ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, যেসব শিক্ষক দীর্ঘদিন সমান্তরালে সমাজসেবামূলক এই পেশাগুলো চালিয়ে আসছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে শিক্ষাক্ষেত্রে সংকট তৈরি হতে পারে। তারা বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনারও আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী প্রশ্ন তুলেছেন—শিক্ষকরা যদি যোগ্যতাসম্পন্ন হয়ে ওঠেন ও সময় ব্যবস্থাপনায় সক্ষম হন, তাহলে সমাজসেবামূলক পেশায় তাদের অংশগ্রহণে বাধা কেন? আবার অনেকেই নীতিমালার পক্ষে মত দিয়ে বলেছেন, প্রধান পেশায় পূর্ণ মনোযোগ ও নিষ্ঠা নিশ্চিত করতেই এই বিধান কার্যকর করা জরুরি।
জানা গেছে, সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা শিক্ষা অফিস প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে এবং তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করবে। এরপর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।