ভারতে মূল্যস্ফীতি প্রায় শূন্য, বাংলাদেশে ৮ শতাংশের বেশি

বাংলাদেশ ভারত পতাকা
বাংলাদেশ ভারত পতাকা  © সংগৃহীত

অক্টোবর মাসে ভারতের অর্থনীতির খুচরা মূল্যস্ফীতি হার নেমে এসেছে ১ শতাংশেরও নিচে, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সর্বনিম্ন। ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে মাত্র ০.২৫ শতাংশে।

অন্যদিকে, প্রতিবেশী বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো ৮ শতাংশের ঘরেই স্থিতিশীল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৮.১৭ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বর মাসে ছিল ৮.৩৬ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, ১০ শতাংশের ঘর থেকে কিছুটা কমলেও ৮ শতাংশে অবস্থান মানে জনগণের জীবনে মূল্যস্ফীতির চাপ এখনো কমেনি।

ভারতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসার পেছনে অন্যতম কারণ খাদ্যপণ্যের দামের পতন এবং সরকারের করছাড় নীতি। এসব করছাড়ের ফলে যানবাহন থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও কমেছে। ফলে দেশটির বর্তমান মূল্যস্ফীতি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নির্ধারিত লক্ষ্য ৪ শতাংশেরও নিচে অবস্থান করছে।

এ ছাড়া, আরবিআইয়ের সহনসীমা ৬ শতাংশের নিচে টানা সাত মাস ধরে মূল্যস্ফীতি থাকা এবং অক্টোবর মাসে অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশিত হার (০.৪৮ শতাংশ)-এর চেয়েও কম হওয়ায় এটি রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এ পরিস্থিতি ভারতীয় পরিবারগুলোর বাজেট চাপ কমাবে, ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে নতুন গতি আনবে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, আরবিআই আগামী মাসে আবারও নীতি সুদহার কমাতে পারে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার দফায় দফায় বাড়িয়ে বর্তমানে ১০ শতাংশে নিয়েছে। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের মতে, শুধু মুদ্রানীতি কঠোর করলেই মূল্যস্ফীতি কমবে না।

সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ মনে করেন, উচ্চ নীতি সুদ ঋণের প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিয়েছে, যার ফলে অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত গতি আসছে না।

তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রানীতির পাশাপাশি রাজস্বনীতি ও বাজার ব্যবস্থাপনাকেও সমন্বিতভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তবেই দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ কার্যকরভাবে কমানো সম্ভব হবে।


সর্বশেষ সংবাদ