বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি নাকি বদলি—কোনটি আগে, জানাল এনটিআরসিএ-মাউশি

এনটিআরসিএ ও মাউশি লোগো
এনটিআরসিএ ও মাউশি লোগো  © ফাইল ছবি

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হয়েও সুপারিশবঞ্চিত প্রার্থীদের নিয়ে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। ডিসেম্বরের মধ্যে এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যদিকে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরগুলো। ফলে প্রশ্ন উঠেছে—বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি আগে, না বদলি?

এনটিআরসিএ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এনটিআরসিএর সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক ও কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। বদলির জন্য সফটওয়্যার তৈরি ও নীতিমালা সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। এই কার্যক্রম শেষ হতে সময় লাগবে। ফলে চলতি বছরের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম।

অন্যদিকে ১৮তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণদের জন্য বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি অনেকটা চূড়ান্ত করেছে এনটিআরসিএ। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ই-রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করে ডিসেম্বরের মধ্যে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। সে হিসেবে বদলির আগে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান শাখার এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, “চলতি বছরের মধ্যেই ১৮তম নিবন্ধনে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হলেও সুপারিশ না পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই এ কার্যক্রম শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।

অন্যদিকে বদলি কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, বদলির সফটওয়্যার তৈরির জন্য এটুআইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা লিখিতভাবে জানালে সফটওয়্যার তৈরির কাজ শুরু হবে। একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত এবং ইনডেক্সধারী উভয় শ্রেণির শিক্ষকদের বদলি সম্পন্ন করা হবে। এজন্য কিছুটা সময় লাগবে। এছাড়া বদলি নীতিমালায় কিছু সংশোধন আনার বিষয়ও বিবেচনায় আছে।

তবে বদলি কার্যক্রমের আগে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা। তাদের দাবি, এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী আগে বদলি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে, এরপর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যেতে পারে। তা না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, দূরের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার কারণে তাদের জীবনে নানান সংকট তৈরি হয়েছে। জুনিয়র শিক্ষকরা মাসে ৯ হাজার ৩০০ টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পান—যা দিয়ে দূরবর্তী এলাকায় থাকা প্রায় অসম্ভব। অনেক নারী শিক্ষক সংসার ভাঙনের মতো দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন।

কারিগরি শিক্ষক নেতা মো. রাশেদ মোশারফ বলেন, বদলি নীতিমালা ২০২৪-এর ৩.১৫ ধারায় বলা আছে, বদলির আগে কোনো গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাবে না। যদি তা করা হয়, বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। বদলি না থাকার কারণে শিক্ষকরা অমানবিক কষ্টে রয়েছেন। দ্রুত সফটওয়্যার তৈরি করে বদলি কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানাই।


সর্বশেষ সংবাদ