মারা গেলেন মহানবীকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র আঁকা বিতর্কিত কার্টুনিস্ট
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২১, ০৫:২৫ PM , আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২১, ০১:২৫ PM
৮৬ বছর বয়সে মারা গেলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র আঁকা ড্যানিশ কার্টুনিস্ট কুর্ট ওয়েস্টারগার্ড। দীর্ঘ অসুস্থতার পর গত ১৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কুর্টের পরিবারের বরাতে রবিবার (১৮ জুলাই) এই খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
২০০৫ সালে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র আঁকার পর বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পরিচিতি পান কুর্ট। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে ইসলাম-বিদ্বেষী হিসেবে সমালোচিত ড্যানিশ পত্রিকা জাইল্যান্ডস-পোস্টেনে কাজ করতেন।
২০০৫ সালে জাইল্যান্ডস-পোস্টেনের সম্পাদকীয়তে ১২টি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়। অধিকাংশ ব্যঙ্গচিত্র ইসলামের শ্রেষ্ঠ পয়গম্বরকে ইঙ্গিত করে আঁকা হয়েছিল। ইসলাম নিয়ে সমালোচনা ও স্বআরোপিত সেন্সরের মতো বিষয়গুলো সহজ করতে ছবিগুলো প্রকাশিত হয় বলে দাবি করে পত্রিকাটি।
১২টি চিত্রের মধ্যে ছিল কুর্ট ওয়েস্টারগার্ডের আঁকা ব্যঙ্গচিত্র। মহানবী (সা.) এর চিত্রায়ন ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ইসলামী পয়গম্বরকে ইঙ্গিত করে আঁকা কুর্টের ব্যঙ্গচিত্রতে তাঁকে আপত্তিকর ও নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়।
ছবিগুলো প্রকাশের সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী মুসলিমরা ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলেন। ডেনমার্কেও শুরু হয় বিক্ষোভ। মুসলিম প্রধান দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের কাছ থেকে ডেনমার্ক সরকার অভিযোগ পেতে থাকে।
২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিক্ষোভের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায়। ডেনমার্কের দূতাবাসগুলোতে হামলার ঘটনা ঘটে। বাড়তে থাকা সহিংসতায় প্রায় ডজনখানেক মানুষ নিহত হন।
তবে ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। ফ্রান্সের শার্লি এবদো ব্যঙ্গচিত্রগুলো পুনরায় প্রকাশ করলে ২০১৫ সালে ম্যাগাজিনটির অফিসে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ১২ জন নিহত হন।
ব্যঙ্গচিত্রগুলো প্রথমবার প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই কুর্ট ওয়েস্টারবার্গ হুমকি পেতে থাকেন। প্রাথমিকভাবে তিনি আত্মগোপনে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও পরবরতীতে ডেনমার্কের অরহুসে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত একটি বাড়িতে বসবাস করা শুরু করেন।
২০০৮ সালে কুর্টকে হত্যার পরিকল্পনাকারী তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় ড্যানিশ গোয়েন্দা সংস্থা। দুই বছর পর, ওয়েস্টগার্ডের বাড়ি থেকে ২৮ বছর বয়সী এক সোমালি যুবককে ছুরিসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হত্যাচেষ্টা ও জঙ্গিবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১১ সালে ঐ যুবককে নয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরবর্তী বছরগুলোতে ওয়েস্টারগার্ড নিরাপত্তারক্ষীসহ গোপন ঠিকানায় থাকতে শুরু করেন। ২০০৮ সালে রয়টার্সের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ছবিগুলো নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই।
সূত্র: বিবিসি