যানজট নিরসনে ঢাবিতে হচ্ছে এক লেন, হলে বাঙ্ক বেড
- তাওসিফুল ইসলাম ও সিদ্দিক ফারুক, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৮:১৫ PM , আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:৩০ PM
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নেয়া, হলে হলে প্রশাসনের মাধ্যমে সিট বন্টনসহ নানা সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসুর সভা শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ক্যাম্পাসের যানজট হয় সেজন্য নীলক্ষেত থেকে টিএসসি পর্যন্ত একমুখী লেন তৈরি করা হবে। সিটি কর্পোরেশনকে এ ব্যাপারে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এই ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও আবাসন সঙ্কট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলে প্রাথমিকভাবে বাঙ্কবেড বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। হলগুলোর মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কবি জসম উদ্দীন হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডাকসু জিএস গোলাম রব্বানী বলেন, ২২ মার্চ ডাকসুর ক্যালেন্ডার সময় শেষ হবে। আমরাও চাই সময়মত নির্বাচন হয়ে যাক। এই ব্যাপারে স্যার পরবর্তীতে মিটিংয়ে জানিয়ে দিবেন বলেন। কিন্তু ভিপি নুর বলেন, ভিসি স্যার এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি।
নুরুল হক নুর বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর নির্বাচন হয়েছে। অনেক প্রতিকূলতা কাটাতে হয়েছে। বিভিন্ন কারণে ডাকসুতে সমন্বয়হীনতা এবং প্রতিকূলতা ছিল। কিন্তু আজকে প্রাণবন্ত আলোচনা চলছে। তাতে শিক্ষার্থীবান্ধব অনেক উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সব পেমেন্ট অনলাইনে আসার কথা বলা হয়েছে এবং নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য নবীন বরণ করা হবে। এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি তাদেরকে দিকনির্দেশনামূলক কথা বলা হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সেই সরকারের ছাত্র সংগঠন হলগুলোতে দখলদারিত্ব রাখে। এ ব্যাপারে ভিসি স্যার বলেছেন হলের প্রাধ্যক্ষদের নির্দেশ দিবেন। যাতে করে প্রথম বর্ষ থেকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে সিট প্রদান করা হয়। ঢাবির স্বাতন্ত্র্য ও ৭৩-এর অরডিন্যান্স রক্ষার জন্য সবাই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিরোধিতা করেছেন।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষের ধারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে এবং সেটাকে ধারণ করার জন্য মল চত্বরে একটি ল্যান্ডমার্ক টাওয়ার তৈরি করা হবে।
এদিকে সভা শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে কথা জানান ভিপি নুরুল হক নুর। সেখানে তিনি বলেন, সভায় প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে শুধু ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ নয়, ছাত্রলীগের অনেকেও তার (প্রক্টর) পদত্যাগ চেয়েছেন।
ভিপি বলেন, সভায় জানানো হয়, শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কাছে গেলে অনেক সময়ই তিনি নেতিবাচক ও রূঢ় আচরণ করে থাকেন। প্রক্টর হিসেবে তিনি এই আচরণ করতে পারেন না। এছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় নীরবতা ও পক্ষপাতমূলক আচরণ করে থাকেন। এটি নিয়েও কথা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি কোন সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কল্যাণই হবে।
লাইভে নুর বলেন, আমার দাবি ছিল, প্রশাসনের মাধ্যমে সিট বন্টন করা। অনেকের আপত্তি থাকলেও শেষ পর্যন্ত এজেন্ডাটি রাখা হয়। সব হলে যেন প্রশাসনের মাধ্যমে সিট বন্টন করা হয়, সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়াও সভায় বিভিন্ন বিভাগে নামে-বেনামের ফি আদায়ের বিষয়ের কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, সভায় গণরুম সমস্যা সমাধান নিয়ে কথা হয়েছে। এজন্য তিনটি হলে ৫টি করে মোট ১৫টি বাঙ্ক বেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে নুর বলেন, হলে হলে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের দৌরাত্ম চলে আসছিল, সেই প্রেক্ষিতেই আমার দাবি ছিল হলে হলে প্রশাসনে মাধ্যমে সিট বন্টন করা। সেই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শুরু থেকেই সিট প্রদান করা। নুর বলেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তখনই তাদের ছাত্র সংগঠন মেয়েদের হল ছাড়া ছেলেদের হলগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আমরা আশা করছি, আগামীতে সেটা হবে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সেই আশ্বাস পেয়েছি।