ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা!

যশোরে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে
যশোরে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে  © প্রতীকী ছবি

আল আমিন নামে পাঁচ বছরের এক শিশুকে তার পাষণ্ড বাবা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটি এখন যশোর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের বাকুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। শিশুটি একই গ্রামের দাউদ হায়দারের ছেলে হলেও শিশুটি নানী সাকিরন নেছার কাছে থাকে।

শিশু আল-আমিনের নানী সাকিরন নেছা জানান, তিনি অত্যন্ত অভাবী মানুষ। যে কারণে দাউদ সরদারের বাড়িতে কাজ করতেন। কাজ করার সুবাদে তার কিশোরী কন্যার যাওয়া-আসা ছিল দাউদ সরদারের বাড়িতে। এ সুযোগে দাউদ তার কিশোরী কন্যাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে তার কন্যা গর্ভবর্তী হয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় সাকিরন নেছা বাদি হয়ে যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন, যার নম্বর ২২৩১৭। বর্তমানে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্রুনাল-২-তে বিচারাধীন আছে। ওই সময় গর্ভের বাচ্চার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আবেদন করলে আদালত পরীক্ষার জন্য পাঠান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভের সন্তান দাউদ সরদারের বলে প্রমাণিত হয়।

তখন আদালত তাকে আটকের নির্দেশ দিলে তিনি ওই মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হন। বিয়ের শর্তে আদালত তাকে আটক করেননি। পরে আদালতের নির্দেশে বিয়ে করলেও ওই বাচ্চা ও স্ত্রীকে স্বীকৃতি দেয়নি দাউদ সরদার। ফলে বাপের বাড়িতেই বসবাস করতে থাকে ওই কিশোরী।

সাকিরন নেছা আরো জানান, দাউদ সরদারের বয়স ৬৫ বছর। ছেলে-মেয়েরা অনেক বড়, উচ্চ শিক্ষিত ও বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেন। পাঁচ বছরের ছোট বাচ্চা যখন তাকে আব্বা বলে ডাকেন, তখন তাদের সম্মানে বাঁধে। যে কারণে শিশুটিকে তারা মেরে ফেলতে চেয়েছে। তাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গত বুধবার রাত ১টার দিকে শিশু আল-আমিনের শরীরে আগুন দেয় দাউদ সরদার ও তার পরিবারের লোকজন।

এসময় আল-আমিনের চিৎকারে সবাই চলে আসে এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে। পরে তার নানী সকিরন নেছা যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তাকে ঢাকায় স্থানন্তর করা হবে বলেও সাকিরন নেছা জানিয়েছেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে অগ্নিদগ্ধের পিতা দাউদ সরদার বলেন, ‘এ ঘটনা মিমাংসার জন্যে কিশোরীর মা সাকিরনকে ১২ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। ওই সন্তানের সকল খরচ বহন করার দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রতিমাসে সন্তানের ভরণ পোষণের জন্যে খরচ দেন। সাকিরন তার কাছে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করছে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আল-আমিনকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা করে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘একই ঘরে সাকিরন ও আল-আমিন ঘুমিয়েছিলেন। কিন্তু আল-আমিন অগ্নিদগ্ধ হলেও সাকিরনের কিছু হয়নি। এটি বিশ্বাস করার মতো নয়। মূলত তার কাছ থেকে নতুন করে টাকা আদায় করতে নতুন নাটক সাজিয়েছে সাকিরন।’ এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ